সৌরভ মাজি, বর্ধমান: আপনার বাড়ির পুজোর জায়গা গোপাল রয়েছে? তাহলে তো নিশ্চয়ই মা-ঠাকুমাদের নিত্য সেবা করতে দেখেছেন। সময় মতো ঘুম ভাঙানো, খাবার দেওয়া এতো নতুন কিছুই নয়। তাঁরা গোপালকে নিজের সন্তানের মতোই পালন করেন। পূর্ব বর্ধমানের মেমারি স্টেশন বাজারে অবশ্য গোপাল নয়। ঠিক একজন মানুষের মতোই গ্রহরাজ এবং মা কালীকে পালন করেন মন্দিরের সেবায়েতরা। তাই তো করোনা (Coronavirus) সংক্রমণের সময় তাঁদেরও নাক, মুখ ঢাকল মাস্কে।
গত শনিবার ছিল পূর্ব বর্ধমানের মেমারি স্টেশন বাজার এলাকার গ্রহরাজ ঠাকুর মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস। ওই মন্দিরেরই গ্রহরাজের মূর্তির মুখে মাস্ক। মা কালীর মূর্তিতেও মাস্ক। ব্যাপারটা কী? এমন দৃশ্য দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। করোনা পরিস্থিতিতে দেবদেবীর মূর্তিতে মাস্ক পরিয়ে সচেতনতার বার্তা দিতে চেয়েছেন গ্রহরাজের পুজো কমিটির লোকজন। গ্রহরাজের পুজো ৪৫ বছর ধরে হচ্ছে। রীতি অনুযায়ী, গত বছর আনা মূর্তি বিসর্জন দেওয়া হয় এবং নতুন মূর্তি এনে প্রতিষ্ঠা করা হয়।উদ্যোক্তা সুজিত দাস, রামকৃষ্ণ হাজরা, প্রবীর সু, অর্জুন মণ্ডল এবং পূজারি মণি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, চলতি বছরেও নিয়মে কোনও ছেদ পড়েনি। তবে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়াতে মূর্তি নিরঞ্জন করতে নিয়ে যাওয়ার সময় মাস্ক পরানো হয়। আবার নতুন মূর্তিতেও মাস্ক পরিয়ে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। শনিবার যেহেতু রাজ্যজুড়ে সাপ্তাহিক লকডাউন ছিল, তাই বেশি ভক্ত ভিড় করেননি।
করোনা সংক্রমণ বাড়ছে হু হু করে। রাজ্যের করোনা গ্রাফ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী। এই পরিস্থিতিতে অদৃশ্য ভাইরাসকে কিছুটা হলেও রুখতে মাস্কের কোনও বিকল্প নেই বলেই বারবার সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই অনুযায়ী অধিকাংশ মানুষই মাস্ককে প্রত্যেক মুহূর্তের সঙ্গী করে নিয়েছেন। এই পরিস্থিতি তাই দেবদেবীই বা বাদ যাবেন কেন? গ্রহরাজ মন্দির কমিটির সদস্যদের ভাবনা সাধারণ মানুষের যে বেশ মন ছুঁয়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফের পরেও যাঁরা অসচেতন তাঁরা কবে সচেতনতার আলোয় আলোকিত হবেন, সেটাই দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.