সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেদ, কৃচ্ছসাধন আর স্বপ্ন সত্যি হওয়ার আশা – সম্বল বলতে ছিল এই তিনটিই। এদের হাতিয়ার করেই এতকাল ধরে বুকের ভিতর সযত্নে লালন করেছেন স্বপ্নটা। আর ছিল চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাস, স্বপ্ন একদিন সত্যি হবেই। আগামী ৫ তারিখ তার ফল হাতেনাতে পাবেন জব্বলপুরের অশীতিপর বৃদ্ধা। রাম মন্দিরের (Ram Temple) ভূমিপুজো দেখে ভাঙবেন দীর্ঘ ২৮ বছরের উপবাস। এই রাম মন্দির দেখতে চেয়েই এত বছর ধরে তিনি অন্ন দাঁতে কাটেননি। তাঁর এই জেদের কথা জেনে সকলেই কুর্নিশ করছেন।
সালটা ১৯৯২। দেশের ইতিহাসে লেখা হয়েছিল রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ নিয়ে বিতর্কিত অযোধ্যা (Ayodhya) পর্ব। সেই দিন থেকেই খাওয়াদাওয়া ছেড়েছিলেন জব্বলপুরের উর্মিলাদেবী। তখন তাঁর বয়স ছিল ৫৩ বছর। সেদিনই রামের নামে পণ করেছিলেন, যতদিন না রাম মন্দির তৈরি হবে, ততদিন তিনি অন্ন-জল গ্রহণ করবেন না। এতদিন প্রায় উপবাসেই দিন কেটেছে। তাঁর খাবার বলতে ছিল সামান্য ফলমূল আর দুধ। কোনওভাবেই তাঁকে অন্য কিছু খাওয়ানো যায়নি। কথাও বলতেন না কারও সঙ্গে বিশেষ। এভাবে দিন কাটাতে কাটাতে যাতে অসুস্থ না হয়ে পড়েন, তার জন্য পরিবারের সদস্যরা দিনরাত উর্মিলাদেবীর দেখভাল করেছেন, যত্ন নিয়েছেন।
এতগুলো বছর ধরে অযোধ্যা মামলা বিচারাধীন থাকার পর অবশেষে দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে তৈরি হচ্ছে রাম মন্দির। ৫ তারিখ ভূমিপুজো। রূপোর ইট পেতে তার সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই খবর কানে পৌঁছেছে উর্মিলাদেবীর কানে। আজ, ৮১ বছরে দাঁড়িয়ে তিনি বলছেন, এতদিনে তাঁর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। এবার তিনি নিশ্চিন্ত হয়ে খাবার খাবেন। অযোধ্যায় গিয়ে ভূমিপুজোর সাক্ষী থাকবেন বলে জেদ ধরেছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি আর তাঁর বয়সের কথা বিবেচনা করে পরিবারের সদস্যরা তাতে রাজি হননি। উর্মিলাদেবীকে বোঝানো হয়েছে। প্রথমে নাছোড় জেদ ধরলেও, পরে পরিস্থিতি বুঝে তিনি বাড়ি থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের ৫ তারিখের অনুষ্ঠান দেখায় রাজি হয়েছেন। স্বপ্নপূরণ হবে যে!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.