সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেফটি পিন, চুলের ক্লিপ, ব্রেসলেট, মঙ্গলসূ্ত্র। শুনেই মনে হচ্ছে কোনও গৃহবধূর ড্রেসিং টেবিল ঘাঁটছেন বা তাঁর সাজগোজের সামগ্রীর একটা আলগা বর্ণনা দিচ্ছেন। এরমধ্যে আর অবাক হওয়ার মতো কীইবা আছে। আরে আছে আছে। ড্রেসিং টেবিলের বদলে এই যাবতীয় সামগ্রী যদি কোনও মহিলার পেটে থাকে, তাহলেই তো চিত্তির। আপনি অবাক হলেন কী হলেন না বড় কথা নয়। এমনটাই ঘটেছে। মানসিক বিকারগ্রস্ত মহিলার পাকস্থলি থেকেই বেরিয়েছে এসব সামগ্রী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে আহমেদাবাদের এক বেসরকারি হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, ওই রোগিণীর নাম সঙ্গীতা। বছর চল্লিশের সঙ্গীতাদেবী মানসিকভাবে অসুস্থ। বেশ কিছুদিন ধরে আহমেদাবাদ শহরের রাস্তাতেই ঘুরছেন। মাঝে মাঝে যন্ত্রণায় চিৎকার চেঁচামেচিও করছেন। যাতায়াতের পথে অনেকেই বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন। তাঁদের মধ্যেই কয়েকজন ওই মহিলাকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে মহিলার উপসর্গ দেখে তাঁর পেটের একটি এক্স-রে করা হয়। এক্স-রে রিপোর্টে চিকিৎসকরা দেখতে পান, সঙ্গীতাদেবীর পেটের মধ্যে বেশকিছু অবাঞ্ছিত ধাতব বস্তু রয়েছে। খুব শিগগির অস্ত্রোপচার না করলে রোগিণীর অসুস্থতা আরও বাড়বে। এমনকী, মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে। এদিকে ওই সরকারি হাসপাতালটিতে এই ধরনের অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামো না থাকায় মহিলাকে সেখান থেকে অন্য একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিন সেখানেই অস্ত্রোপচারের পর মহিলার পেট থেকে একে একে বেরিয়ে এল চুলের ক্লিপ, শিকল, সেফটি পিন, চুরি, মঙ্গলসূত্র, ব্রেসলেট, পেরেক, নাটবল্টু ইত্যাদি ইত্যাদি। মহিলার পেট থেকে বেরিয়ে আসা ধাতব সামগ্রীর ওজন প্রায় দেড় কেজি। এসব দেখে বিস্মিত চিকিৎসকরাই। ঠিক কতদিন ধরে রোগিণী এগুলি পেটের মধ্যে বয়ে চলেছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই ধাতব বস্তুগুলি থেকে বড়সড় বিপদ ঘটতে পারত। সেফটি পিন যদি কোনওভাবে ফুসফুসকে ছিদ্র করে ফেলত তাহলে মৃত্যু অবধারিত ছিল।
বলা বাহুল্য, সেসব কিছই ঘটেনি। টানা দুঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পর সঙ্গীতাদেবী এখন অনেকটাই বিপন্মুক্ত। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই মহিলা বিরল মানসিক রোগে আক্রান্ত। এই রোগের অন্যতম লক্ষণই হল, ধাতব বস্তু খেয়ে ফেলা। এক্ষেত্রে তেমনটাই ঘটেছে। যেখানে যখন যা লোহার টুকরো, ক্লিপ, পেরেক পেয়েছেন তাই খেয়েছেন মহিলা। তবে তিনি কীভাবে এই রোগের শিকার হলেন তা জানা যায়নি। যদিও অস্ত্রোপচারের আগেই জানা গিয়েছে, মহিলা আহমেদাবাদের বাসিন্দা নন। তাঁর বাড়ি মহারাষ্ট্রের শিরডি-তে। ইতিমধ্যেই ওই মানসিক হাসপাতালের তরফে শিরডি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। একটাই উদ্দেশ্য, যদি সঙ্গীতার পরিজনদের কোনও খোঁজখবর পাওয়া যায়। উদ্দেশ্য সফল হলে পরিজনদের কাছে ফিরে যেতে পারবেন সঙ্গীতা। আপাতত অস্ত্রোপচারের পরে ভালই আছেন তিনি। চিকিৎসকরা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.