Advertisement
Advertisement

এই গ্রামের বাসিন্দারা আজও কথা বলেন সংস্কৃতে, কোথায় জানেন?

মাত্র দশ বছর বয়সের ছেলেমেয়েরা এখানে অবলীলায় পড়ে ফেলতে পারে বেদ বা উপনিষদ।

Mattur is a village where the usage of Sanskrit for communication
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:September 28, 2019 6:49 pm
  • Updated:September 28, 2019 8:47 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভাষা অমূল্য সম্পদ। বিশ্বায়নের যুগে মাতৃভাষা এখন লুপ্তপ্রায়। দেবনগরী তো কবেই হারিয়ে গিয়েছে। ভারতের সংস্কৃতি যার উপর দাঁড়িয়ে আছে, সেই সংস্কৃতকেই ভুলতে বসেছে মানুষ। কিন্তু ব্যতিক্রম সবকিছুরই আছে। বোধহয় শিকড় আঁকড়ে ধরার চেষ্টারও। তাই তো যখন সবাই বিদেশি ভাষাকে আপন করে মাতৃভাষা ভুলতে বসেছে, তখন আদিকালের দেবনগরীকেই আঁকড়ে ধরে বেঁচে রয়েছে একটা আস্ত গ্রাম।

গ্রামের নাম মাত্তুর। কর্ণাটকের শিমোগা জেলার তুঙ্গ নদীর তীরবর্তী এই গ্রামে কথোপকথনও চলে সংস্কৃতে। এমনকী ঝগড়া করতে হলে লোকে শব্দরূপ, ধাতুরূপের প্রয়োগ করে। ক্রিকেট বা ফুটবলের কমেন্ট্রিও হয় সংস্কৃতেই। একসময় এই গ্রাম দ্রাবিড় অধ্যুষিত ছিল। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবই বদলেছে গ্রামে। এখানকার মানুষ পড়াশোনা শিখে বাইরে গিয়েছে চাকরিসূত্রে। কিন্তু প্রত্যেকেরই হাতেখড়ি হয়েছে দেবভাষাতেই। এখনও এখানে কথ্যভাষা সংস্কৃত। যুগের হাওয়ায় অবশ্য কন্নড়‚ তেলেগু‚ তামিল মিশে গিয়েছে। কিন্তু সংস্কৃতের মূল ব্যাকরণ এখানকার বাসিন্দারা দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করে। গ্রামের সব সম্প্রদায়ের, সব পেশার মানুষই ঝরঝরে সংস্কৃত বলতে পারেন। এমনকী, সরকারি নথিতে এই গ্রামের নাম ‘সংস্কৃত গ্রাম’।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: যৌনাঙ্গে কামড় মহিলার, অ্যান্টিবায়োটিকে সুস্থ হল উট ]

গ্রামটা ভারী অদ্ভুত। শুধু সংস্কৃত ভাষাকে দৈনন্দিন জীবনের অন্তর্গত করে ফেলাই নয়, অন্তর থেকে এই ভাষাকে আপন করে নিয়েছে এখানকার বাসিন্দারা। গ্রামে ঢুকলে দেখা যাবে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও সাবলীলভাবে বলছে সংষ্কৃত বাক্য। ইতিহাস, ভূগোলের মতো ছোটরা এখানে পড়ে বেদও। মাত্র দশ বছর বয়সের কোনও ছেলে বা মেয়ে অবলীলায় পড়ে ফেলতে পারে বেদ বা উপনিষদ। অনেকে তো এও বলেন, সংস্কৃত ভারতের প্রতিটি ভাষার আঁতুরঘর। তাই এই ভাষা শেখা অপেক্ষাকৃত সহজ। যদিও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা এই কথা শুনলে ভিরমি খাবে। শুধু ছোটরা কেন? বড়দের মুখ হাঁ হয়ে যাওয়াও বিচিত্র নয়।

গ্রামবাসীরা এর বেশিরভাগ কৃতিত্বটাই দিচ্ছে ‘সংস্কার ভারতী’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে। প্রতিদিন এখানে প্রায় হাজার পাঁচেক পড়ুয়া সংস্কৃত ভাষা শেখে। প্রাচীন ভাষাকে লুপ্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছে এই স্কুল। আর সেই নজিরবিহীন উদ্যোগেই স্কুল কর্তৃপক্ষ পাশে পেয়েছে গোটা গ্রামকে।

তবে কৃতিত্ব একা মাত্তুরকে দিলেই হবে না। এর যমজ আরও একটি গ্রাম রয়েছে। সেখানেও কথোপকথনের ভাষা সংস্কৃত। সেই গ্রামটির নাম হোসাল্লি। এটিও তুঙ্গ নদীর তীরে অবস্থিত। অবশ্য মাত্তুরের মতো এই গ্রামের সকলেই দেবভাষায় সাবলীল নয়। কিন্তু মাত্তুরের মতো এখানেও সংস্কৃত এখানে সর্বস্তরে প্রচলিত। এছাড়া মধ্যপ্রদেশের ঝিরি গ্রাম, ওড়িশার উপকূলবর্তী গজপতি জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সাসানা, মধ্যপ্রদেশের কারেলি তেহসিলের বাঘুয়ার, রাজস্থানের গানোরা ও মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুর জেলার মোহাড় গ্রামের অধিকাংশ গ্রামবাসীই সংস্কৃতে কথা বলতে পারদর্শী। 

[ আরও পড়ুন: হাসপাতালে ঘুরছে ‘ভূতুড়ে’ হুইলচেয়ার! ভাইরাল ভিডিওয় ছড়াল আতঙ্ক ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement