ধীমান রায়, কাটোয়া: কথায় আছে, মাছ খায় সবাই। নাম হয় মাছরাঙার। নাহলে ‘ওনার’ই বা মদের আসরে ওভাবে ঢুকে পড়ার প্রয়োজন কি ছিল? দীর্ঘদিন ধরে লকডাউনের কারণে বন্ধ ছিল মদের দোকান। সরকারিভাবে মদের দোকান খুলে দেওয়ার পরেই দেশজুড়ে দেখা গিয়েছে সুরাপ্রেমীদের দীর্ঘ লাইন। রাতদিন এক করে দোকানের সামনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে মদ কিনতে দেখা যাচ্ছে রসগ্রাহীদের।
বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারের কাছে একটি নির্জন জায়গা দেখে দুই সুরাপ্রেমী এক বোতল হুইস্কি নিয়ে বসেছিলেন। মুখরোচক খাবারের সঙ্গে চলছিল একের পর এক পেগ। তখনই দেখা যায় একটি হনুমান সটান হাজির ওই আসরে। তবে আতিথেয়তায় কসুর করেননি ওই সুরাপ্রেমীরা। তাদের ভাগ থেকেই বড়সড় পেগ তৈরি করে বাড়িয়ে দিলেন একজন। আর রীতিমতো আগ্রহের সঙ্গে তা টেনে নিয়ে চোঁ চোঁ করে সাবার করে দিল হনুমানটি। এক নয় একেবারে দু’পেগ।
স্থানীয়দের দাবি, কয়েকটি হনুমান ভাতার বাজার এলাকায় রোজ ঘোরাঘুরি করে। তাদের মধ্যে রয়েছে এই ‘মদ্যপায়ী’ হনুমানটি। স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী মৃণাল সোম বলেন, “এই হনুমানটি আমাদের চেনা। প্রায় দিন কলা, আলু ইত্যাদি দিই। হাতে হাতে নিয়ে যায়।”,তা বলে কলা আলু ভুলে হুইস্কি? সুরাপ্রেমী দুজনের মধ্যে একজনের দাবি, “হনুমানটি শুধু হুইস্কি খাইনি। এর আগে তাড়িও (তালরস) খেয়েছে। আমরা এখানে মদ খেতে বসার সময় দেখি একটি তাল গাছে বেঁধে রাখা হাঁড়িতে মুখ ঢুকিয়ে তাড়ি খাচ্ছে। তারপর আমরা মদ খেতে শুরু করতেই আমাদের কাছে চলে আসে। ওর হ্যাংলামো দেখে দু’পেগ দিলাম। মনে হয় ওর নেশার অভ্যাস আছে।”
তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ কাটোয়া মহকুমা বন আধিকারিক পশু বিশেষজ্ঞ সুকান্ত ওঝা। তিনি বলেন, “আসলে হনুমান মানুষের সঙ্গে বেশি মিশতে মিশতে প্রভুভক্ত হয়ে যায়। মানুষের হাত থেকে খাবার খেতে খেতে বিশ্বাস জন্মে যায়। আর বিশ্বাসের কারণেই মদ খেয়ে নিয়েছে। নেশার উদ্দেশ্যে খায়নি।” হনুমানকে মদ্যপান করানোর ভিডিওই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। এভাবে অবলা প্রাণীকে মদ্যপান করানোর বিষয়টি মোটেও মেনে নিতে পারছেন না পশুপ্রেমীরা। পরিবর্তে সুরাপ্রেমীর কীর্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.