কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: হনুমান সেজে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছেন বহরমপুরের বহুরূপী সুব্রত রায়। রাজ্য সরকারের ভাতা বাবদ এক হাজার টাকা করে পেলেও তিনি বিপিএল তালিকাভুক্ত নন। ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে হনুমান বেশে বেশ ভালই রোজগারও করছেন। বহরমপুর ব্লকের রাধার ঘাট ২ নং পঞ্চায়েতের বসন্ততলা এলাকার সুব্রত রায় ১৯৯৬ সাল থেকে বহুরূপী সেজে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। বিবাহের তিন বছর পর গ্লুকোমা রোগে স্ত্রী লক্ষ্মী রায় দু’চোখের দৃষ্টি হারান। বর্তমানে অন্ধ স্ত্রী-সহ দুই কন্যাসন্তান নিয়ে দরিদ্র পরিবার ওই বহুরূপীর। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে দু’একশো টাকা যা রোজগার হয় তাতেই কোনও রকমে সংসার চলে।
[আরও পড়ুন: ৬ কুইন্টাল লাড্ডু বিলি! দিল্লিতে নতুন মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ উদযাপন বাঁকুড়ায় ]
সুব্রত রায় বলেন, তিনি একসময় বিপিএল তালিকাভুক্ত ছিলেন, রেশনের সমস্ত জিনিস সুলভে পেতেন। কিন্তু গত কয়েক বছর আগে স্থানীয় পঞ্চায়েতে বিপিএল তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ গিয়েছে। তবে ২০১৫ সাল থেকে রাজ্য সরকারের ভাতা বাবদ এক হাজার টাকা করে পান তিনি। সুব্রত রায় বলেন, “মা কালী, হঠাৎ বাবু এবং হনুমান বেশে আমি মানুষকে আনন্দ দিয়ে প্রতিদিন সামান্য কিছু পয়সা রোজগার করি।” তবে ভোটের সময় বেশ কিছুদিন তাঁর কাজ বন্ধ ছিল। ভোটের ফলাফল রাজ্যে ঘুরে যেতেই ‘জয় শ্রীরাম ধ্বনি’ দিয়ে বাজারে নেমে পড়েছেন সুব্রত রায়। এদিন তিনি বলেন, হনুমান রামের ভক্ত হওয়ায় ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি শুনে কাউকে কিছু বলতে শোনেন নি তিনি। বরং তাঁর অঙ্গভঙ্গি দেখে সাধারণ মানুষ ভালোবেসে হাতে টাকা দেন। তবে বিপিএল তালিকায় নাম না থাকায় রেশন থেকে সস্তায় চাল পান না বহুরূপী সুব্রত। তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতা রাজিব হোসেন যে তাঁকে বিভিন্ন সময়ে আর্থিক সাহায্য করেন, তা জানাতে ভোলেননি।
রাধারঘাট ২ নং পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান বিশাখা মণ্ডল বলেন, ‘২০১৩ সালে সার্ভে রিপোর্ট হয়েছিল । সেই রিপোর্টে যে কোনও কারণেই হোক, সুব্রত রায় নামে ওই ব্যক্তির নাম বিপিএল থেকে বাদ গিয়েছে। তবে ওই বহুরূপীকে নানান ভাবে সাহায্য করে পঞ্চায়েত। আগামী দিনে নিশ্চয়ই তাঁর বিপিএল কার্ড নিয়ে ব্যবস্থা করবে পঞ্চায়েত।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.