সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গার্হস্থ্য হিংসা-সহ মেয়েদের উপর সংঘটিত অপরাধ নিয়ে যখন গোটা বিশ্বে আন্দোলন চলছে, যখন নারীর ক্ষমতায়ণ নিয়ে সরব হচ্ছেন পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে, তখন স্বামীদের উদ্দেশে এক মহিলা মন্ত্রীর পরামর্শ, স্ত্রী কথা শুনলে দরকার পড়লে তাঁকে মারধর করুন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার (Malaysian) এই মহিলা মন্ত্রী ইনস্টাগ্রামে (Instagram) একটি ভিডিওবার্তা দেন দেশের জনতার উদ্দেশে। সেখানেই তাঁকে চরম বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা যায়। যার পর চূড়ান্ত সমালোচনা শুরু হয়েছে নেট মাধ্যমে।
সিতি জইলাহ ইউসুফ (Siti Zailah Mohd Yusoff) আবার মালয়েশিয়ার নারী ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। সেই তাঁকেই কিনা বলতে দেখা গেল, স্বামীর উচিত স্ত্রীকে বুঝিয়ে দেওয়া যে তিনি প্রয়োজনে কঠিন হতে পারেন। স্ত্রীর চারিত্রিক পরিবর্তন চান স্বামী, তাও বুঝিয়ে দেওয়া উচিত স্বামীটির। মালয়েশিয়াবাসীকে সংসারিক বিষয়ে পরামর্শ দিতেই ইনস্টাগ্রামে একটি দু’মিনিটের ভিডিও পোস্ট করেন নারী ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের মন্ত্রী ইউসুফ। যেখানে তিনি বলেন, “যে সব মহিলা কথা শোনেন না তাঁদের অনুশাসনে বাঁধতে কথা বলা উচিত স্বামীর। তাতে কাজ না হলে তিন দিন আলাদা বিছানায় শোয়া উচিত।” এতেও সাংসারিক অনুশাসন যদি না মানেন স্ত্রী?
JAG calls for immediate resignation of Siti Zailah Mohd Yusoff, Deputy Minister of Women for her video message in support of violence against women. pic.twitter.com/WG7Bpt6mXP
— TENAGANITA (@Tenaganita) February 14, 2022
সিতি ইউসুফ বলেন, “এরপরেও কথা না শুনলে স্ত্রীর গায়ে হাত দিতে পারেন স্বামী। অল্পস্বল্প মারধরও করতে পারেন। এর ফলে স্ত্রী অনুভব করবেন স্বভাব পরিবর্তন না হলে স্বামীটি কতটা কঠিন রূপ ধারণ করতে পারেন।” মহিলাদের প্রতি মন্ত্রী তথা প্যান-মালোয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টির নেত্রীর পরামর্শ, স্বামী অনুমতি দিলেই তবেই তাঁর সঙ্গে কোনও বিষয়ে কথা বলুন। তাঁর কথায়, “স্বামীর মেজাজ বুঝে, তাঁর খাওয়াদাওয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর, যখন স্বামীটি অবসর সময় কাটাচ্ছেন, তখন তাঁর সঙ্গে কথা বলুন। কোনও বিষয়ে উত্থাপনের আগে অনুমতি চেয়ে নেবেন।”
View this post on Instagram
ইউসুফের এ হেন ভিডিও বার্তায় তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নেটিজেনদের মতে, একজন মহিলার মানবাধিকার নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন ইউসুফ। একজন বলেছেন, “পুরুষ, নারী, শিশু বা পশু কাউকেই মারার অধিকার থাকতে পারে না কোনও মানুষের। লজ্জাজনক মন্তব্য!” একজন নেটিজেন বলেন, “ছিঃ, আপনি একজন মন্ত্রী! কী করে এমন মন্তব্য করতে পারলেন! পদত্যাগ করা উচিত আপনার।”
শুধু নেটিজেনরাই নয়, মালয়েশিয়ার একটি মানবাধিকার সংগঠন, নারীর সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও কড়া নিন্দা করেছে ইউসুফের ভিডিও বার্তার। সকলেই পদত্যাগ দাবি করেছে মন্ত্রীর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.