সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হনুমান জয়ন্তীর (Hanuman Jayanti) উদযাপনকে ঘিরে দেশ জুড়ে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে জানা গেল এমন এক গ্রামের কথা, যেখানে হনুমানের উপাসনা করা হয় না। গ্রামের কোথাও হনুমানের মন্দির নেই, কেউ হনুমান চালিশা পড়েন না। এমনকী মারুতি গাড়িও কেনেন না কেউ, কারণ মরুৎ পুত্র হওয়ার কারণে হনুমানকে অনেকেই ‘মারুতি’ নামে ডাকেন। তাহলে কার উপাসনা করেন এই গ্রামের বাসিন্দারা? সেটিও অত্যন্ত চমকপ্রদ ব্যাপার। এই গ্রামের মানুষজন এক রাক্ষসের পুজো করেন।
ব্যতিক্রমী এই গ্রামের নাম দৈত্যনন্দুর। মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) এই গ্রামটি চর্চায় উঠে এসেছে হনুমান জয়ন্তী নিয়ে দেশব্যাপী হিংসার পরেই। কিন্তু কেন হনুমানের পুজো হয় না এই গ্রামে? উত্তর পাওয়া যায় পুরাণ থেকেই। রামচন্দ্রের পরম অনুগামী ছিলেন হনুমান। কথিত আছে, সীতা আযোধ্যা ছেড়ে আসার পরে দণ্ডকারণ্যে তাঁকে খুঁজতে আসে হনুমান। সেখানেই নিম্বা নামে এক রাক্ষসের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। তারপরেই দু’জনের মধ্যে সাংঘাতিক লড়াই হয়। ক্লান্ত হয়ে পড়ে দু’জনেই। সেই সময়ে উভয়েই রামচন্দ্রকে ডাকেন। নিম্বা রাক্ষসের ভক্তি দেখে মোহিত হয়ে যান রামচন্দ্র। দণ্ডকারণ্যে নিম্বা ছাড়া আর কেউ কোনওদিন পূজিত হবেন না, এই বর দেন রামচন্দ্র।
পুরাণের সেই দণ্ডকারণ্যই আজকের দৈত্যনন্দুর গ্রাম বলে মনে করেন স্থানীয়রা। সেই কারণেই দৈত্যনন্দুর গ্রামে সাড়ম্বরে পূজিত হন নিম্বা রাক্ষস। হনুমানকে (Lord Hanuman) এড়িয়ে চলেন গ্রামের বাসিন্দারা। ছেলে, মেয়েদের নাম রাখা হয় না হনুমানের নামে। তাঁরা মনে করেন মারুতি গাড়ি কিনলে, তার জীবনে নিশ্চিত অমঙ্গল নেমে আসবে।
দৈত্যনন্দুর গ্রামের এক বাসিন্দা অঙ্কুশ ওয়াঘ জানিয়েছেন, “আমি এই গ্রামেই জন্মেছি, বড় হয়েছি। আমাদের গ্রামে কোনও হনুমান মন্দির নেই। কেউ হনুমান চালিশা পড়েন না।” এমনকী বাড়িতে হনুমানের ছবি বা মূর্তিও রাখেন না এই গ্রামের বাসিন্দারা। অঙ্কুশ জানিয়েছেন, “আমরা নিম্বা রাক্ষসের উপাসনা করি। গুড়ি পড়বা অর্থাৎ মারাঠি নববর্ষের দিনেই নিম্বা রাক্ষসের পূজা করা হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.