সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “বনে থাকে বাঘ, গাছে থাকে পাখি।” সেই বনের বাঘ-সিংহ যদি বাড়ির ছাদে উঠে বসে, হেঁটে-চলে বেড়ায়, তবে গৃহস্থের আত্মারাম খাঁচা ছাড়া তো হবেই। গত শুক্রবার রাতে তেমনই গায়ে কাঁটা দেওয়া অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেলেন গুজরাটের (Gujarat) এক ছাপোষা চাষি। আচমকাই তিনি ও তাঁর পরিবারের অন্যরা বুঝতে পারেন, একটি নয়, তিন-তিনটি সিংহ (Lion) বসে আছে তাঁদের মাটির বাড়ির টালির ছাদে। তারপর?
ভারতের আফ্রিকা যে গুজরাটের গির অভয়ারণ্য তা জানা বন্যপ্রাণপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসুদের। সেই গির সোমনাথ জেলার ফাতসার গ্রামে শুক্রবার ঘটে ভয়ংকর ঘটনাটি। গ্রামটি জঙ্গলের গা ঘেঁষা এলাকার। পেশায় কৃষক বছর আটচল্লিশের লাজলি মেসিয়া জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটে রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে। তিনি ও তাঁর পরিবার সেই সময় বাড়ির সামনের এক ফালি উঠোনে খাটিয়া পেতে গভীর ঘুমে। পরিবার বলতে তিন ও ছয় বছরের দুই মেয়ে ও লাজিয়ার মা-বাবা। হঠাৎই মাটির বাড়ির টালির ছাদে শব্দ হয়। ঘুম ভেঙে যায় লাজিয়ার। বেশ কয়েকবার শব্দ হওয়ায় ছাদে টর্চের আলো ফেলেন তিনি।
আলোতে যা দেখেন, তাতে মাথা ঘুরে যাওয়ার অবস্থা হয় তাঁর। আসলে তখন ছাদে বসে তিনটি বিরাট চেহারার সিংহ। তারা মাঝেমাঝে নড়েচড়ে বসছিল বলেই শব্দ হচ্ছিল। লাজিয়া বলেন, “দুটো ছোট মেয়ে আর বয়স্ক বাবা-মাকে নিয়ে কোথায় লুকাবো বুঝতে পারছিলাম না। একবার উপর থেকে ঝাপিয়ে পড়লে বাঁচার উপায় নেই।” অতএব, কোনওরকমে পা টিপে টিপে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যান লাজিয়া। দূর থেকে টর্চের আলো ফেলে সিংহগুলোকে তাড়ানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে প্রতিবেশীরা হাজির হন। তাঁরাও সিংহগুলিকে তাড়ানোর চেষ্টা করেন। তাতে দু’টি সিংহ সরে পড়লেও একটিকে কিছুতেই ছাদ থেকে নামানো যাচ্ছিল না।
এর মধ্যে খবর পৌঁছয় গির অভয়ারণ্য কর্তৃপক্ষের কাছে। এরপর বনকর্মীরা এসে সিংহটিকে তাড়িয়ে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেয়। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন ফাতসার গ্রামের বাসিন্দারা, হাফ ছেড়ে বাঁচেন লাজিয়া মেসিয়া। গির অভয়ারণ্যের এক আধিকারিক বলেন, “এটি ছিল একটি পুরুষ সিংহ। দু’বছর বয়স। খবর পাওয়া পাত্র বন্যকর্মীরা গ্রামে পৌঁছেছিলেন। সিংহটিকে তাড়িয়ে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.