বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: মাটি কেটে কুয়োর মধ্যে চলছিল পোড়ামাটির পাট বসানোর কাজ। প্রায় ২৫ ফুট নিচে নেমে সেই কাজ করছিলেন বাপ্পা বিশ্বাস। হঠাৎই ধস নেমে একেবারে নিচে চাপা পড়ে যান বছর পঁচিশের যুবক। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় আধঘন্টা মাটির নিচে চাপা ছিলেন ওই যুবক। যদিও তড়িঘড়ি তাকে বাঁচানোর জন্য তৎপর হয়ে পড়েন সঙ্গীরা। তাঁরাই পাশ দিয়ে বেশ কিছুটা মাটি কেটে নিচে ঢুকে পড়েন। প্রায় আধাঘণ্টার চেষ্টায় উদ্ধার করা হয় ওই যুবককে। মাটির নিচে এতক্ষণ চাপা থাকার পরও অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে ফিরেছেন যুবক। সোমবারের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নদিয়ার শান্তিপুর থানার ফুলিয়ার নতুন বুইচা এলাকায়।
ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি করা হয়েছিল বাপ্পা বিশ্বাসকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রথমে শরীরিক অবস্থা খারাপ থাকলেও এখন সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন ২৫ বছরের যুবক। ফুলিয়ার খামারপাড়ার অরবিন্দপল্লিতে বাড়ি বাপ্পা বিশ্বাসের। বছর তিনেক ধরে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। ফুলিয়ার বালির গর্তের কাছে নতুন বুইচা এলাকার জয়ন্ত রায়ের বাড়িতে বাপ্পা অন্যদের সঙ্গে পায়খানার কুয়ো কাটার কাজ পেয়েছিলেন। মূলত মাটি কেটে প্রায় ২৫ ফুট গর্ত করে তার মধ্যে পোড়ামাটির পাট বসানো হয়। পাশাপাশি একই ধরনের দু’টি কুয়ো কাটা হয়। যদিও একটি কুয়োর মধ্যে পাট বসানোর কাজ হয়ে গিয়েছিল। পাশের অন্যটিতে মাটি কেটে গর্ত করার পর নিচে থেকে পাট বসানোর কাজ করছিলেন বাপ্পা। হঠাৎই ধস নামে। মাটির নিচে সম্পূর্ণ চাপা পড়ে যান বাপ্পা।
বাড়ির মালিক জয়ন্ত রায় বলেন, “আমি কলপাড়ে জল আনতে এসে দেখি, কুয়োর কাজ যারা করছিল, তাদের মধ্যে দু-তিনজন চিৎকার শুরু করেছে। আমার চোখের সামনে আরও কয়েকবার ধস নামে। মাটির নিচে প্রায় আধঘন্টা চাপা পড়েছিল ওই যুবক। এরপর অন্য শ্রমিকরা পাশ দিয়ে মাটি কেটে নিচে ঢুকে কোনওভাবে উদ্ধার করে আনে ওকে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও, প্রাণে বেঁচে গিয়েছে ওই যুবক। আমি প্রথমে শান্তিপুর থানায় ফোন করে খবর দিয়েছিলাম। সেখান থেকে খবর দেওয়া হয় দমকলকে। যদিও ততক্ষণে ওই যুবকের সঙ্গীরাই তাকে উদ্ধার করে ওপরে নিয়ে আসে।”
বাপ্পার মামা মানিক সরকার বলেন, “আমার ভাগ্নের সঙ্গে যারা কাজ করছিল, তাদের চেষ্টাতেই এ যাত্রায় ওকে আমি ফিরে পেয়েছি। ওরাই পাশ দিয়ে মাটি কেটে আমার ভাগ্নেকে উদ্ধার করেছে। ও মাটির নিচে চাপা পড়ে আটকে গিয়েছিল। দমকল আসার আগেই ওরা আমার ভাগ্নেকে উদ্ধার করেছে। বর্তমানে আমার ভাগ্নে সুস্থ রয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.