সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়শই ঘোরাঘুরি করে একটি ছবি। যেখানে দেখা যায়, এক মহিলা স্তন্যদান করছেন একটি হরিণশিশুকে। আরও একটি ছবি ঘোরে। যেখানে নিজের সন্তান ও হরিণের ছানাকে একই সঙ্গে স্তন্যদান করছেন অপর এক মহিলা। কিন্তু কেন এমন সন্তানস্নেহে হরিণদের স্তন্যদান করেন এই মহিলারা?
[ মোবাইল ছেড়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিক হিন্দুরা, নিদান ধর্মগুরুর ]
অনেকেই এ ছবিকে মাতৃত্বের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন। নিঃসন্দেহে তাই-ই। তবে এ শুধু কোনও একক মহিলার মাতৃত্বের ছবি নয়। বরং একটি সম্প্রদায়েরই রেওয়াজ। এই সম্প্রদায়ের নাম বিষ্ণোই। মূলত থর মরুভূমির প্রত্যন্ত এলাকায় এবং উত্তর ভারতের কোনও কোনও অংশে তাঁদের বাস। গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকাতেও তাঁদের দেখা মেলে। গুরু জাম্বেশ্বরের ভক্ত তাঁরা। শিষ্যদের উদ্দেশ্যে এই গুরুর ২৯ দফা নির্দেশিকা ছিল। যা মান্য করেন সম্প্রদায়ের মানুষরা। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, পশু-পাখি এবং প্রকৃতিকেও রক্ষা করা। সেই নিয়মের বশবর্তী হয়েই অনাথ হরিণশিশুদের আপন করে নেন। এমনকী পরম মমতায় স্তন্যদান করেও বাঁচিয়ে রাখেন। তাঁরা মনে করেন, একটি প্রাণীর ক্ষতি করা মানে নিজেদেরই আত্মার ক্ষতি করা। তাই বন্যপ্রাণকে রক্ষা করতে উদ্যোগী এই সম্প্রদায়। প্রকৃতি নিয়েও এই সম্প্রদায়ের ভাবনা বেশ ব্যতিক্রমী। মূলত নিরামিষাশী তাঁরা। মৃত্যুর পর তাঁরা শব দাহ করেন না। কেননা তাতে কাঠ লাগে। ক্ষতি হয় বনের ও গাছের। তাই মৃত্যুর পর দেহ কবর দেওয়ারই সিদ্ধান্ত এঁদের।
এই সম্প্রদায়েরই এক মহিলার ছবি ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। যেখানে এক হরিণশাবককে স্তন্যদান করতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। তাঁরা যে বন্যপ্রাণীদের সন্তানস্নেহে স্তন্যপান করান, এ প্রথা তাঁদের কাছে গর্বেরও। শুধু অনাথ হরিণশিশুই নয়, যে কোনও শাবকদের জন্য তাঁদের একইরকম আদর। তাঁরা মনে করেন, হরিণশিশুর মা থাকতেই পারে। কিন্তু সে যখন কোনও মহিলার কাছে আসছে, তখন ওই মহিলাই তাঁর মা। এবং সেক্ষেত্রে একজন মহিলা তাঁর সন্তানকে যেরকম স্নেহ করেন, সেরকমই স্নেহ প্রাপ্য প্রাণীটিরও। মানুষে ও বন্যপ্রাণীতে তাঁরা কোনও বিভেদ করেন না। নেটদুনিয়ায় একাধিক ভিডিও আছে। যেখানে দেখা যায়, একই সঙ্গে নিজের সন্তান ও হরিণশাবককে স্তন্যপান করাচ্ছেন মহিলারা।
Hi Friends
[Hindi] Women of Bishnoi Community Feed their Milk to the Babies of Deer |
Thanks
Akhilesh Kosta https://t.co/NiLRE9DHic— Vellaapanti (@Vellaapanti) June 19, 2017
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ ও প্রকৃতি নিয়ে উদ্বেগ আধুনিক সময়ের সবথেকে বড় চর্চিত বিষয়। সেখানে এই সম্প্রদায়ের প্রয়াস যে অত্যন্ত আধুনিক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
[ বাবা প্রতিবন্ধী বলে অবজ্ঞা, প্রেমিকার অপমানে আত্মঘাতী যুবক ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.