সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতার ৭৫ বছরে দেশবাসীকে ‘অমৃত মহোৎসব’ পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। যদিও শতক ছুঁতে যাওয়া দেশের প্রান্তিক মানুষের কাছে আজও ন্যূনতম পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যায়নি বলেই অভিযোগ। ফলে উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) অসুস্থ প্রৌঢ়াকে কাঁধে নিয়ে ১২ কিলোমিটার পথ হেঁটে তবে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছতে সক্ষম হন তাঁর আত্মীয়রা। এই ঘটনায় রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, করুণ চিত্র প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
উত্তরকাশি (Uttarkashi) জেলার ডিঙ্গারি গ্রামের বাসিন্দা বছর বাহান্নোর শকুন্তলা দেবী (Shakuntala Devi)। বেশ কিছুদিন ধরেই জ্বর ও পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন। ঘরোয়া ওষুধ দেওয়া হলেও কাজ হয়নি। ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছিলেন প্রৌঢ়া। এরপরই গত সোমবার পরিবারের লোকেরা সিদ্ধান্ত নেন, তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন। তাতে যদি রোগ সারানো যায়। কিন্তু ‘নিকটবর্তী’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি রয়েছে সারনুলে। ডিঙ্গারি থেকে সেই সারনুলের দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। দীর্ঘ পথে যানবাহনের ব্যবস্থা নেই। তাহলে? বাধ্যতামুলক প্রৌঢ়াকে কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যান আত্মীয়রা।
এর জন্য বাঁশের সঙ্গে একটি চেয়ারকে শক্ত করে বাঁধা হয়। আত্মীয়রা ওই চেয়ারে বসিয়ে মহিলাকে নিয়ে যান সারনুলের চিকিৎসাকেন্দ্রে। চিকিৎসা পেতে এভাবে ১২ কিলোমিটার পাড়ি দেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্য সরকারের সমালোচনা শুরু হয়। নিন্দায় সরব হয়েছে একাধিক সংগঠন। রাজ্যের পরিচিত সমাজকর্মী কৈলাশ রাওয়াত (Kailash Rawat) বলেন, “ওই জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবার এটাই কিন্তু বাস্তব চিত্র। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও, উত্তরাখণ্ড নির্মাণের ২২ বছর পরেও এমনটাই চলছে।”
কৈলাশ জানান, সার, ডিঙ্গারি, গোথুকা, পান্তি, কিমদার ও লেভতাড়ির মতো গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবা বলতে কিছু নেই। শুধু স্বাস্থ্য পরিষেবাই কেন! গ্রামে স্কুল নেই, সড়কের অবস্থা তথৈবচ। সমাজকর্মীর কথায়, “শকুন্তলা দেবীর ঘটনা নতুন কিছু নয়, ওই অঞ্চলের মানুষকে এভাবেই চিকিৎসকের কাছে পৌঁছতে হয়। ভাগ্যই সম্বল মানুষগুলোর।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.