এই স্মৃতিস্তম্ভে সাঁটা হয় বিদ্যুতের বিল।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মরেও শান্তি নেই, সে আপনি যতই দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া বিপ্লবী হোন! দেশজুড়ে যখন স্বাধীনতার ৭৫ বছরে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালিত হচ্ছে, তখন বাংলার দুই মহান বিপ্লবীর নামে বিদ্যুতের বিল পাঠাল উত্তর বিহার বিদ্যুৎ পর্ষদ। ক্ষুদিরাম বসু (Khudiram Bose) এবং প্রফুল্ল চাকীর (Prafulla Chaki) নামে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকার বিদ্যুতের বিল পাঠানো হয়েছে। শহিদদের হাতের কাছে না পেয়ে মুজাফফরপুরের তাঁদের স্মৃতিস্তম্ভে সেঁটে দেওয়া হয়েছে বিলটি। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে মুজাফফরপুর-সহ গোটা বিহারে (Bihar)। প্রশ্ন উঠছে, শহিদদের নামে বিদ্যুতের বিল কি ভুল করে?
উত্তর বিহার বিদ্যুৎ পর্ষদ ওই বিল পাঠিয়েছে ২২ ফেব্রুয়ারি। বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৯৪৩ টাকা। বকেয়া মেটানোর নোটিস সেঁটে দেওয়া হয়েছে মুজাফফরপুরের কোম্পানি বাগ এলাকার ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীর স্মৃতিস্তম্ভে। নোটিসে বলা হয়েছে, আগামী ৪ মার্চের মধ্যে বকেয়া না মেটালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট মুজাফফরপুর জেলে ফাঁসি হয়েছিল ক্ষুদিরাম বসুর। নেপথ্যে ছিল ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার চেষ্টা। যদিও ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকীর ছোঁড়া বোমায় মৃত্যু হয়েছিল দুই ব্রিটিশ মহিলার। এরপর নিজের শরীরে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন প্রফুল্ল। মোকামা স্টেশনে ধরা পড়েন ক্ষুদিরাম। ১৮ বছর ৮ মাস ১১ দিন বয়েসে ফাঁসি হয় তাঁর। দেশের সবচেয়ে কম বয়েসি শহিদ ছিলেন তিনি।
প্রশ্ন হল, মৃত্যুর ১১৫ বছর পর তাঁদের নামে বিদ্যুৎ বিল কেন? পাটনার বিদ্যুৎভবনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই বিল ভুয়ো নয়। ভুল হয়নি পর্ষদের। আসলে বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে দুই শহিদের স্মৃতিস্তম্ভের। সেখানে রাতে আলো জ্বলে, যার দেখভালের দায়িত্ব একটি বেসরকারি সংস্থার। কিন্তু তাদের নামে বিল না করে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীর নামে নোটিশ কেন? খবরটিকে ভাইরাল করে ওই সংস্থাকে চাপে ফেলার কৌশল? উত্তর দেয়নি পর্ষদ। এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, স্মৃতিস্তম্ভের বিদ্যুৎ সংযোগ যাতে বিচ্ছিন্ন না হয় তা দেখুক প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.