সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন দশকের অপেক্ষা সার্থক৷ পাঁচ, পাঁচটা জাহাজের নোঙর ফেলে অষ্টপ্রহর হাপিত্যেশ করে বসে থাকাও সফল৷ জাপানে এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে তিমি ধরতে নেমেছিল একটি সংস্থা৷ আর তাদের জালে ধরা পড়ল গত তিন দশকের সবচেয়ে বড় প্রাণীটি৷ ২৭ ফুট লম্বা মিংকে প্রজাতি তিমিটাকে জালে টেনে তুলতে সে এক হিমশিম দশা সকলের৷ তবে পাড়ে আসার পর তা ঘিরে সে কী উল্লাস!
ইন্টারন্যাশনাল হোয়েলিং কমিশন থেকে নিজের নাম তুলে নিয়েছে জাপান৷ আর তারপরই মহাসমারোহে এখানে শুরু হয়েছে তিমি ধরার কাজ, একেবারে বাণিজ্যিকভাবে৷ আগের কয়েক বছর তাতে তেমন সাড়া পড়েনি৷ কিন্তু এবার যাকে বলে একেবারে, পোয়াবারো৷ জাপানের কুশিরো শহরের ধরা পড়া মিংকে তিমি নিয়ে শোরগোল৷ জাপান স্মল হোয়েলিং অ্যাসোসিয়েশনের অধিকর্তা ইওশিফুমি কাইয়ের কথায়, ‘আজকের দিনটা সবচেয়ে সুন্দর৷ আমরা একটা ভাল তিমি ধরতে পেরেছি৷ ৩১ বছরের খরা কাটল৷ এটা খুব সুস্বাদু হবে বলে আমাদের আশা৷’
তিমিটা জালে ওঠার পর জাহাজের সাহায্যে তাকে পাড়ে আনা হয়৷ তারপর একটি ট্রাকে করে তা পৌঁছে দেওয়া হয় নিকটবর্তী রেস্তরাঁয়৷ সেখানে তাকে কাটাছেঁড়া করে রান্নার উপযুক্ত করে তোলা হয়৷ তবে তার আগে একপ্রস্ত সেলিব্রেশনও হল৷ এমন সাফল্যে সকলে মিলে তিমির গায়ে ওয়াইন ঢেলে গ্লাসের বাকিটুকু পান করে নিলেন একচুমুকে৷ জাপানে তিমি ধরার উদযাপনে এটাই নাকি প্রচলিত রীতি৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, কাটার সময় খুব খারাপ একটা গন্ধ পেয়েছিলেন তাঁরা৷ তবে উৎসাহের চোটে সেই গন্ধ সহ্য করে সেখানেই ছিলেন৷ জানা গিয়েছে, যথাযথ প্রক্রিয়াকরণের পর এই সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে আসবে তিমির দেহাংশ৷ চড়া দামে বিকোবে বলেই মনে করছেন অনেকে৷ কাই নিজেই বলছেন, ‘আমি তো মাংস খাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি৷’
গোটা পদ্ধতিটি সাংবাদিকদের সামনেই ঘটে৷ বিশেষত তিমি ধরার প্রক্রিয়া দেখেশুনে অনেক সাংবাদিকই পিছু হঠেছিলেন৷ একজন জানালেন, ‘ওই মাছ জাহাজগুলোর সঙ্গেই মাছ ধরার নৌকা আটকানো ছিল৷ যখন অত বড় তিমিটা লাফ দিল, সঙ্গে সঙ্গে নোঙর আলগা করে নৌকাগুলো পিছিয়ে আসে৷ নাহলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত৷ তিমি ধরা দূরের কথা, তিমিটাই মূর্তিমান বিপদ হয়ে দাঁড়াত৷’ তবে এমন দুর্লভ দৃশ্য চিত্রসাংবাদিকদের কাছে একেবারে যাকে বলে সোনায় সোহাগা৷ তাঁরা পাড়ে দাঁড়িয়ে মনের সুখে ছবি তুলেছেন৷ সেটাই এখন ভাইরাল নেটদুনিয়ায়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.