মাসুর আহমেদ, শ্রীনগর: সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবির কথা মনে আছে? ঘরের ভিতর বাঘমামাকে দেখে কী হাল হয়েছিল গুপির? গানের সুরে রীতিমতো বাঘের হাতে পায়ে ধরে সেখান থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরেছিল সে। জঙ্গলে হোক বা চিড়িয়াখানায়, চোখের সামনে আস্ত একটি বাঘ এসে দাঁড়ালেই গলা শুকিয়ে যাওয়ার জোগাড় হয়। এমন হিংস্র প্রাণীর সামনে সাধারণত বেশ সাবধানেই থাকেন আমজনতা। কিন্তু জম্মু ও কাশ্মীরের কিশতোয়ার জেলায় একটি চিতাবাঘকে ঘিরে যে কাণ্ড করলেন পথচারীরা, তা ছবির চিত্রনাট্যকেও হার মানায়।
পথ ভুল করে কোনওভাবে জঙ্গল থেকে সোজা রাস্তায় এসে পৌঁছেছিল এক চিতাবাঘ। ছিংগাম গ্রামের সে রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়তই মানুষ ঘোরাফেরা করে। মনুষ্য দুনিয়ায় এসে পড়া বাঘটি বেশ শান্তভাবেই রাস্তার ধার দিয়ে হাঁটছিল। কিন্তু পথচারীরা কি আর এমন মওকা সহজে ছেড়ে দেয়? বাইকআরোহীদের অনেকে বাইক থামিয়ে চিতাবাঘকে ধাওয়া করলেন। অনেককে আবার চিতার সামনে হাঁটতে দেখা গেল মোবাইল হাতে। জঙ্গলের রাজার সঙ্গে সেলফি তোলাই তাঁদের উদ্দেশ্য। অদ্ভুতভাবে কারও চোখে-মুখে ভয়ের কোনও ছাপ নেই। পথচারীদের সাহস দেখলে অবাক হতে হয়! রাস্তা দিয়ে হাঁটছে চিতা। অথচ তাকে দেখে ভয়ে গা না ঢেকে নাকি সেলফি তোলার হিড়িক পড়েছে! ভাবা যায়!
এমন বিরল দৃশ্যই ক্যামেরাবন্দি হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। জানা গিয়েছে, পরে বনদপ্তরের কর্মীরা এসে সেই চিতাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বনদপ্তর সূত্রে খবর, চিতাবাঘটি অসুস্থ ছিল। কিশতোয়ারের ট্রমা সেন্টারে এখনও তার চিকিৎসা চলছে। সেই কারণেই নিরীহ প্রাণীর মতোই মনু্ষ্যজগতে বিচরণ করছিল সে। স্বরূপ ধারণ করলে, সেই পথচারীদের কী অবস্থায় পড়তে হত, ভাবলে আপনার গায়েও কাঁটা দেবে।
দেখে নিন সেই ভিডিও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.