সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুঃস্বপ্ন আর রূপকথা যেন পিঠোপিঠি দুই ভাই! অন্তত এই ‘কাহিনি’তে। আজ থেকে ২৫ বছর আগে যখন জানা গিয়েছিল, কুড়ি মাসের শিশুর শরীরে রয়েছে বড় সমস্যা। লিভার প্রতিস্থাপন ছাড়া বাঁচানো যাবে না। তখন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল পরিবারের। আজ ২৫ বছর পর সেই শিশুই ঝকঝক যুবক। এমনকী প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক। তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) বাসিন্দা সঞ্জয় কান্দাস্বামীর জীবনের এই ঘটনা রূপকথাকেও লজ্জা দিতে পারে।
বিস্তারিত জানতে যেতে হবে ফ্ল্যাশব্যাকে। সেটা ১৯৯৮ সাল। দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে্ছে সঞ্জয়কে। জন্ম থেকেই বিলিয়ারি আর্টেসিয়া নামে এক ধরনের লিভারের রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। লিভার থেকে গলব্লাডার পর্যন্ত যে নালি, তা বন্ধ ছিল এই অসুখের জেরে। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, যকৃত প্রতিস্থাপন না হলে সঞ্জয়কে বাঁচানো যাবে না।
ছেলের জীবন বাঁচাতে লিভার দান করেন বাবা। দুই যুগ আগে ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালে জটিল সেই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। যা ছিল ভারতে প্রথম কোনও শিশুর শরীরে লিভার প্রতিস্থাপন। এর পর একটু একটু করে সুস্থ হয়ে ওঠেন সঞ্জয়। একটু বড় হওয়ার পরে মা-বাবার মুখে শুনতেন সেই গল্প। তখনই স্থির করেন, একদিন যাঁরা তাঁর জীবন বাঁচিয়েছিলেন, বড় হয়ে ঠিক তাঁদেরই মত হবেন।
বাস্তবেই তাই করেও ছাড়লেন সঞ্জয় কান্দাস্বামী। আজ প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক তিনি। যে কথা জেনে আবেগে আপ্লুত সেদিনের চিকিৎসকরা। তাঁদেরই অন্যতম ডাক্তার অনুপম সিবাল। তিনি বলেন, “লিভার প্রতিস্থাপনে দীর্ঘ এবং নিরোগ জীবন পাওয়া যে সম্ভব, সঞ্জয় তাঁর উদাহরণ।” যাকে নিয়ে এত কথা, সেই সঞ্জয় বলেন, “খুব কাছ থেকে যখন চিকিৎসকদের দেখেছি, তখনই ঠিক করি বড় হয়ে ডাক্তার হব। মানুষের জীবন বাঁচানোয় আমারও কিছু অবদান থাকুক, সেটাই আমি চাই। একথাও বোঝাতে চাই, ইচ্ছে থাকলে জীবনের সমস্ত বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.