সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘অন্তঃসত্ত্বা পুরুষ’। এই নামেই তাঁকে ডাকতে শুরু করেছিল আশপাশের মানুষজন। ক্রমেই ফুলতে ফুলতে অস্বাভাবিক ধারণ করেছিল তাঁর পেট। তাই ওই নাম পেয়েছিলেন ৩৬ বছরের পুরুষটি। কিন্তু কেউই কি ভাবতে পেরেছিল, রসিকতাটাই সত্য়ি হয়ে উঠবে! সম্প্রতি সামনে এল এমনই এক ঘটনার কথা। ১৯৯৯ সালে নাগপুরের এক বাসিন্দা গর্ভধারণ (Pregnant) করেন। তাঁর গর্ভে ছিল যমজ সন্তান!
নাগপুরের (Nagpur) ওই ব্যক্তির নাম সঞ্জু ভগৎ। সকলের ঠাট্টা সামলেও তিনি চিকিৎসকদের কাছে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। কিন্তু ক্রমে পেট এমন ফুলে যায় যে, শ্বাস নেওয়াই হয়ে পড়েছিল অসম্ভব। অগত্যা হাসপাতাল যাত্রা। আর মুম্বইয়ের সেই হাসপাতালে ধরা পড়ে যায় তাঁর গর্ভে রয়েছে ভ্রূণ!
প্রথম দেখায় ডাক্তাররা অবশ্য টিউমার বলেই ভাবছিলেন। আশঙ্কা ছিল, ক্যানসারে ভুগছেন সঞ্জু। দ্রুত অস্ত্রোপচারের পরিকল্পনা করার করেন তাঁরা। আর তারপরই সামনে আসে আসল সত্য। যা আক্ষরিক অর্থেই হতভম্ব করে দিয়েছিল তাঁদের। শল্য চিকিৎসক অজয় মেহেতা জানিয়েছিলেন, ওই ব্যক্তির পেট কাটার পর হাত ঢুকিয়ে একে একে এক শিশুর পা, চুল-সহ বিভিন্ন দেহাংশের সন্ধান পান তাঁরা। তাঁর কথায়, ”আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সংশয় ও বিস্ময়ও জাগছিল। মনে হচ্ছিল ওই ব্যক্তির পেটের ভিতরে হাত ঢুকিয়ে কারও সঙ্গে করমর্দন করছি! ভয়ানক চমকে গিয়েছিলাম।”
জানা যাচ্ছে এই বিশেষ শারীরিক অবস্থাকে বলে ‘ফেটাস ইন ফেটু’। অর্থাৎ একটি অপরিণত শিশু জন্ম নেয় ভ্রূণের ভিতরে। কার্যতই পরজীবীর মতো একটি ভ্রূণের শরীরের ভিতরে বেড়ে উঠছিল অন্য একটি ভ্রূণ। কিন্তু শেষপর্যন্ত দু’টি ভ্রূণই মারা যায়। অস্ত্রোপচারের পর সেই ভ্রূণ দু’টির সন্ধানই পান চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এমন পরিস্থিতি অত্যন্ত বিরল। প্রতি ৫ লক্ষটি গর্ভধারণের ক্ষেত্রে একটি ক্ষেত্রে এমন ঘটে। এখন সঞ্জুর বয়স ৩০। সাড়ে তিন দশক আগের সেই ঘটনা এবার চিকিৎসরা প্রকাশ্যে এনেছেন। জানিয়েছেন, ২০ বছর বয়স থেকেই একটু একটু করে পেট ফুলতে থাকে তাঁর। কিন্তু সেটা যে এই কারণে তা সকলেরই জন্য অভাবনীয় ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.