সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নোভেল করোনা ভাইরাসের ভয় দেবতারও আছে কি? নিশ্চয়ই আছে। নইলে মন্দিরের অন্তঃপুরে তিনিই বা মাস্কে মুখ ঢেকে বসে থাকবেন কেন? অবাক লাগছে? কিন্তু এটাই সত্যি। করোনার থাবা থেকে মন্দিরের বিগ্রহকে রক্ষা করতে বারাণসীতে শিবলিঙ্গ ঢেকে দেওয়া হল মাস্কে। দর্শনার্থীরাও সকলে মাস্ক পরে পুজো দিলেন। পুরোহিতের পরামর্শ, কেউ যেন মূর্তি ছুঁয়ে প্রণাম না করেন।
করোনা ভাইরাস একটু একটু করে থাবা বসাচ্ছে ভারতে। এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর খবর নেই। তবে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। রোগ মোকাবিলায় সতর্কতা প্রচার শুরু হয়েছে সর্বস্তরে। পিছিয়ে নেই ধর্মীয় স্থানগুলিও। বারাণসীর মতো তীর্থক্ষেত্রের আধ্যাত্মিক মহলও করোনা সচেতনতায় তাঁদের মতো করে জনগণকে সতর্ক করছেন। যার অংশ হিসেবে তাঁরা দেবমূর্তি ঢাকছেন মাস্কে। কৃষ্ণ আনন্দ পাণ্ডে নামে এক পুরোহিত বলছেন, “করোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছে দেশে। আমরা বাবা বিশ্বনাথের মুখে মাস্ক পরিয়েছি রোগ সম্পর্কে সচেতনতার জন্য। যেমন গরমের সময়ে আমরা মন্দিরে ফ্যান, এসি চালাই, শীতের সময়ে মূর্তিতে চাদর জড়াই। তেমনই রোগ প্রতিরোধ করতে মাস্কও পরানো হয়েছে। আমরা দর্শনার্থীদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি যে তাঁরা যেন মূর্তি ছুঁয়ে প্রণাম না করেন। যদি কেউ তা স্পর্শ করেন, তাহলে তার মাধ্যমে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে পারে।”
এমনিতে করোনা ভাইরাস রুখতে N95 মাস্কই সবচেয়ে কার্যকরী। তবে তার দাম আকাশছোঁয়া এবং ভারতের সর্বত্র তা সহজলভ্যও নয়। করোনা কবলিত রাজ্যগুলিতেই মাস্ক সংগ্রহের জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। তাতে কী? ভক্তি থাকলেই যথাযথভাবে দেবসেবা করা যায়। তাই বারাণসীর মন্দিরে বিগ্রহের জন্য মাস্কের অভাব পড়ে না। ভক্তরা বলেন, ভগবান নিজেই নিজের সুরক্ষার ব্যবস্থা করে নেন।
তবে মাস্ক পরিহিত দেবমূর্তি দর্শন এই প্রথম নয়। গত বছর বারাণসীর মন্দিরে ঢুকলেই দেখা গিয়েছিল কালী কিংবা দুর্গা, এমনকী শিবলিঙ্গেও পরানো রয়েছে মাস্ক। হরিশ মিশ্র নামে এক পুরোহিত জানিয়েছিলেন, “ভগবানকে আমাদের মতো অনুভূতিপ্রবণ বলেই মনে করি। আমরা শীতকালে ভগবানকে ওই ঋতু উপযোগী পোশাক পরাই। তাহলে পরিবেশের যখন ভয়ংকর অবস্থা, তখন আমাদেরও উচিত তাঁদের রক্ষা করা। তাই তো সাধারণ মানুষের মতোই কালী, দুর্গা এমনকী শিবলিঙ্গেও মাস্ক পরিয়ে রেখেছি।” দেবদেবীদের দেখে বহু পুণ্যার্থীও সেসময় মাস্ক ব্যবহার শুরু করেন। এবারও কি সেই সচেতনতা তৈরি হবে নাকি আরও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে? এর উত্তর বোধহয় বারাণসীবাসীই জানেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.