ছবি: প্রতীকী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসিতে অপরের মন জয় করে মানুষ, সেই হাসির কারণে ক্রমশ একা হচ্ছিল ১২ বছরর কিশোর! বন্ধুরা বিরক্ত তার লাগামছাড়া হাসির দমকে। সে নিজেও কষ্ট পাচ্ছিল। একেক সময় দমবন্ধ হয়ে আসত। কিছুতেই থামত না। অবিশ্বাস্য শোনালেও নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে মাতালের মতো হাসত। হাসি বদলে যাচ্ছিল কাঁপুনি ও খিঁচুনিতেও। হাসিই যেন ডেকে আনছিল মৃত্যু! অবশেষে বিরল এই স্নায়ুরোগ থেকে কিশোরকে মুক্তি দিলেন কোচির চিকিৎসকরা। মস্তিষ্কে রোবোটিক অস্ত্রোপচার হল তার।
১২ বছরের আরিয়ান (নাম পরিবর্তীত) ছোট থেকেই অতিরিক্ত হাসত। এর জন্য বাবা, মা, আত্মীয়, স্কুলের শিক্ষক সকলের কাছে খারাপ ছিল সে। ‘আচরণ’ শোধরাতে কড়া শাস্তি দেওয়া হত তাকে। এমনকী মনোবিদের পরামর্শও নেওয়া হয়। এত করেও হাসি কমার বদলে বাড়ছিল। একদিন হাসতে হাসতে দম আটকে অসুস্থ হয়ে পড়ে আরিয়ান। সেদিন হাসপাতালে ভরতি করা হয়। এরপর পরীক্ষা নীরিক্ষায় ধরা পড়ে কঠিন স্নায়ুর অসুখের কথা।
জিলাস্টিক এপিলেপ্টিক সিজার (Gelastic Epileptic Seizures) নামের কঠিন অসুখে আক্রান্ত ছিল আরিয়ান। যা আসলে মৃগী রোগের একটি ধরন। মস্তিষ্কে টিউমার বাসা বাঁধলে তার থেকে এমন উপসর্গ দেখা দেয়। প্রচণ্ড হাসতে থাকে রোগী। যা আনন্দের নয় তো বটেই, বরং ভয়ংকর কষ্টের। ব্রেন টিউমারের কারণে জিলাস্টিক সিজারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমআরআই-তে ছোট আকৃতির ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে আরিয়ানের।
১২ বছরের কিশোরকে সুস্থ করে তুলতে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। কোচির অমৃতা অ্যাডভান্সড সেন্টার ফর এপিলেপ্সি-র নিউরোলজিস্ট ও এপিলেপ্সি স্পেশালিস্ট ডা. শিবে গোপিনাথ আরিয়ানের ব্রেন সার্জারি করেন। তবে খুলি কেটে নয়, রোবোটিক সার্জারিতে টিউমার বের করা হয় কিশোরের। এতে মস্তিষ্কে ছুরি-কাঁচি চালাবার দরকার পড়ে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আরিয়ান সুস্থ আছে, তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.