সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খেতে যারা ভালবাসে, ডিম তাদের অত্যন্ত পছন্দের একটি খাবার। আর হবে নাই বা কেন? ডিম দিয়ে যে সব হরেক রকম সুস্বাদু পদ রাঁধা যায়, তার তুলনা নেই। সাদার মধ্যে হলদেটে কুসুমওয়ালা ডিমের মাহাত্ম্যই আলাদা। কিন্তু যদি হঠাৎ দেখেন ডিমের কুসুমের রং হয়ে গিয়েছে সবুজ? শুনতে অবাক লাগলেও এমন ঘটনাই ঘটছে কেরলে।
সেখানকার একটি পোলট্রি ফার্মের মুরগি যে ডিম পাড়ছে তার কুসুমের রং ঘন সবুজ।
ডিমের কুসুমের রং সাধারণত হয় হলুদ। ক্ষেত্রবিশেষে কমলা কুসুমও দেখা যায়। কিন্তু তাই বলে সবুজ? খবরটি প্রথমবার শুনেই ঘাবড়ে গিয়েছিলেন মালাপ্পুরমের পোলট্রি ফার্মের মালিক এ কে শিহাবুদ্ধেন। বিশ্বাসই হচ্ছিল না তাঁর। শেষ পর্যন্ত নিজে দেখে তবেই বিশ্বাস করেন। খোঁজাখুঁজি করে জানা যায় পোলট্রির ছ’টি মুরগি সবুজ ডিম পাড়ছে। এর আগে মুরগির সবুজ ডিম কেউ দেখেনি। এমনকী এমন কথা শোনাও যায়নি। তাই এলাকার মানুষ তো বটেই, পোলট্রির মালিক শিহাবুদ্ধেন নিজেও নিশ্চিত ছিলেন না এই ডিমগুলো কি আদৌ খাওয়া যাবে? যদি বিষাক্ত হয়? এমনিতে সাধারণ ডিমের মতোই দেখতে। কিন্তু সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে ছুরি দিয়ে কাটলেই ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে সবুজ কুসুম।
মুরগিগুলোকে ডাক্তার দেখিয়েও কোনও লাভ হয়নি। উপায়ন্তর না দেখে শিহাবুদ্ধেন একটি পদক্ষেপ নেন। সবুজ ডিমগুলি না ফাটিয়ে সেগুলোয় তা দিয়ে নতুন মুরগি করার বন্দোবস্ত করেন তিনি। নতুন মুরগি জন্মায়ও। কিন্তু সেই ডিমগুলির রংও সবুজ। গত ন’মাস ধরে এই একই দৃশ্য দেখছে ওই পরিবার। শিহাবুদ্ধেন এই সবুজ ডিমের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরপরই হয় রহস্যের সমাধান।
কেরালার ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটিতে (কেভিএএসইউ) বিজ্ঞানীরা তাঁর খামারে আসেন। তাঁরা গবেষণার জন্য একটি মুরগি এবং কিছু ডিম সংগ্রহ করে নিয়ে যান। গবেষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড: এস শঙ্করালিংগাম জানান যে কোনও জিনগত বিভ্রান্তির কারণে এই ঘটনাটি ঘটেনি। বলেন, “আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে পাখিদের দেওয়া খাবারেরই কিছু গন্ডগোল ছিল। মুরগিগুলি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া খাবার খাচ্ছে। তার পর থেকে হলুদ রঙের কুসুমওয়ালা ডিম দিতে শুরু করেছে ওরা।” প্রফেসর জানান মুরগির ত্বকে একটি সবুজ রঞ্জক পদার্থ আবিষ্কার করেন তাঁরা। তবে শিহাবুদ্ধেন জানান তিন ওই মুরগিদের অন্য কোনও খাবার খেতে দিতেন না। যা বাকি মুরগি খেত, ওরাও তাই খেত। তবে ফার্মের আশপাশে কুরুনথোটি জাতীয় ভেষজ গাছ রয়েছে কয়েকটি। মুরগিগুসলো সেটি খেয়ে থাকতে পারে। তার ফলে ডিম সবুজ হতে পারে বলেও জানান শিহাবুদ্ধেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.