রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: প্রিয়জন না ফেরার দেশে পাড়ি দিলে তখন কি আর আনন্দ করার মতো মানসিক অবস্থা থাকে কারও? নিশ্চয়ই না। পরিবর্তে মনে হয় যদি কোনওভাবে কাছের মানুষটাকে আর একটু আগলে রাখা যেত। তাহলে হয়তো এমন দিন আসত না জীবনে। একেবারেই বিপরীত ঘটনা ঘটল দিঘায়। ১২০ বছর বয়সি দিদার মৃত্যুকে কার্যত উৎসবের চেহারা দিলেন নাতি (Grandson) – নাতনি (Grand Daughter)। ব্যতিক্রমী ঘটনায় অবাক সকলে।
দিঘা (Digha) থানার দক্ষিণ শিমুলিয়ার বাসিন্দা মাহেশ্বরী চন্দ। বেশ অল্প বয়সে বিয়ে। তারপর থেকে সংসারকে সন্তান স্নেহে আগলে রেখেছিলেন তিনি। ছোট ছোট পরিবারের যুগেও একান্নবর্তী পরিবারকে আগলে রেখেছিলেন। ১২০ বছর বয়সি ওই মহিলার কমপক্ষে ৫৬ জন নাতি ছিলেন। দিব্যি কাটছিল জীবন। তেমন রোগ ভোগও করেননি। তবে আচমকাই যেন বদলে গেল সব কিছু। পরলোকের ডাক অগ্রাহ্য করতে পারলেন না বৃদ্ধা। প্রাণ হারালেন। তাঁর মৃত্যু নাতি-নাতনি এবং পরিবারের অন্যান্যদের দুঃখ দিয়েছে ঠিকই। তবে কঠিন বাস্তবকে মেনে নিতে বিশেষ সমস্যা হয়নি তাঁদের।
পরিবর্তে শেষকৃত্যের অভিনব আয়োজন করেন নাতি-নাতনি। হরেক রকম ফুলে সাজিয়ে দেওয়া হয় খাট। আর পাঁচজন শ্মশানযাত্রীর মতো শুধু খই ছড়ানো হল না। রাস্তায় ছড়ানো হল ফুলও। ওড়ানো হল আবির। ফাটল আতস বাজি। এইটুকু পড়ে অবাক হবেন না। তালিকা আরও লম্বা। শবযাত্রীরা ব্যান্ড বাজিয়ে উদ্দাম নাচানাচি করেন। এভাবেই এগোতে থাকে বৃদ্ধার শববাহী মিছিল। শ্মশানের সামনে গিয়ে শেষ হয় নাচানাচি। এমন অভিনব শবযাত্রা অবাক করে দিয়েছে গোটা দিঘাকে। পর্যটক কিংবা স্থানীয় মানুষ, সকলেই ব্যতিক্রমী কাণ্ড কারখানা দেখে থমকে দাঁড়িয়েছেন। কেউ কেউ অবাক হয়েছেন। আবার কেউ এ ধরনের আচরণের তীব্র বিরোধিতা করছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.