ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রেমিকার সঙ্গে প্রায় সারাদিন ঘুরে কাটিয়েছে। সন্ধে নামতে প্রেমিকা চলে যায় বাড়ি। কিন্তু প্রেমিক এতটাই ‘বিভোর’ যে, সে ভুলেই গিয়েছে তাকেও বাড়ি ফিরতে হবে। নিজের বাড়ি পথে না গিয়ে সোজা পৌঁছে প্রেমিকার বাড়ির দরজায়। সন্ধে গড়িয়ে রাত নামে। তখনও সে ঠায় বসে প্রেমিকার বাড়ির দরজায়। আর মাঝে মাঝে ডাক পাড়ে। পাড়ার লোকজন তাকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নাছোড় প্রেমিক। তাকে একচুল নড়ায়, কার সাধ্য? শেষে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সাময়িক সমাধান একটা হলো বটে! প্রেমিকার পরিবারের লোকজন ওই প্রেমিককে পাকড়ে তুলে নিয়ে যায় প্রতিবেশীর বাড়িতে। শুধু রাতটুকু যাতে সে নিরাপদে থাকতে পারে। পরেরদিন ওই প্রেমিকের বাড়িতে খবর দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন প্রেমিকার বাড়ির লোকজন।
আপাতভাবে এই কাহিনি পড়ে পাঠকদের মনে হবে কোনও কিশোর-কিশোরী বা যুবক-যুবতীর প্রেমের এহেন অমোঘ টান নতুন কিছু নয়। লোকলজ্জা ভয় কাটিয়ে প্রেমের জন্য এমন দৃষ্টান্ত মানবজগতে প্রায়ই দেখা যায়। কিন্তু একটি পুরুষ ছাগলের এমন কীর্তিতে যেমন তাজ্জব, তেমনই নাজেহাল। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার সুকান্তপল্লির ঘটনা। ভিন এলাকা থেকে এসে সুকান্তপল্লির এক গৃহস্থের বাড়ির সামনে সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত কার্যত ধরনা দিয়ে গেল প্রেমিক ছাগল। গৃহস্থের মেয়ে ছাগলটিকে তার চাই-ই চাই।
মেয়ে ছাগলটির মালিক গৃহবধূ জানান, তাঁর পোষ্যের সঙ্গে প্রায় সারাদিন কাটায় সমবয়সী খয়েরি রঙের ওই পুরুষ ছাগলটি। বাড়ির কাছাকাছি দু’জনে একজোট হয়ে চড়ে বেড়িয়েছে। তারপর পোষ্য সন্ধের মুখে বাড়ি ফিরে আসে। তার কিছুক্ষণ পর থেকেই একটি ছাগলকে বারবার চিৎকার করতে শোনা যায়। বধূ বাইরে বেরিয়ে দেখেন, ভিনপাড়ার পুরুষ ছাগলটি সদর দরজার পাশে ঠায় বসে। তিনি বলেন,”ওই ছাগলটাকে বারবার তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। কিছুতেই যাচ্ছিল না। পাড়ার কয়েকটা কুকুর ছাগলটাকে আক্রমণের চেষ্টা করছিল। তাই প্রাণ বাঁচানোর জন্য ছাগলটাকে পাড়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। যাতে ভুলে গিয়ে ওদের বাড়ি চলে যেতে পারে। কিন্তু কিছুতেই সরাতে পারিনি।”
এদিকে, প্রেমিকের ত্রাহি চিৎকার শুনে বাড়ির ভিতর থেকে সমানে ডাক পেড়ে চলে প্রেমিকাও। তবে দরজা খোলা হয়নি। শেষে প্রতিবেশীরা কয়েকজন চলে আসেন। তারপর জোর করে ওই পুরুষ ছাগলটিকে তুলে নিয়ে অন্য একজনের গোয়ালে রেখে দিয়ে আসা হয়। আপাতত তার মালিকের খোঁজ করছেন সুকান্তপল্লির বাসিন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.