সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুরের মুর্ছনায় চলে গেল এতগুলি প্রাণ। এমনটা কী হতে পারে? সুর তো মানুষের মনে পুলক সৃষ্টি করে, শান্তি দেয়। অনেক সময়ই প্রাত্যহিক চাপ কাটাতে গান বা কোনও মিষ্টি বাদ্যযন্ত্র শোনার অভ্যেস আছে অনেকের। কিন্তু এই বাদ্যযন্ত্রটি নাকি সত্যিই অনেকের প্রাণ নিয়েছে। কী সেই যন্ত্র। নাম গ্লাস হারমোনিকা। মূলত কাঁচের গ্লাসের কেরামতিতে তৈরি বাদ্যযন্ত্রটি নাকি আপনার প্রাণ কাড়ার জন্য যথেষ্ট।
যন্ত্রটি তৈরি পরপর সাজানো জলভর্তি ওয়াইন গ্লাস দিয়ে। সুরের সামান্য ভুলে সবকটি গ্লাসই পড়ে ভেঙে যাবে। ১৭৬১ সালে সুরের এই মেকানিকাল ভার্সন তৈরি করেন ফ্রাঙ্কলিন। ইতালীয় শব্দ আরমোনিয়ার অর্থ হারমোনি। অনেকে তাই সুরযন্ত্রকে গ্লাস হারমোনিকাও বলেন। হারমোনিকার সুরে মেতে ওঠে গোটা বিশ্ব। আর তারপরই বেরিয়ে আসে তার ভয়াবহ রূপ।
যাঁরা এই বাদ্যযন্ত্রটি নিয়মিত শোনেন তাঁদের মধ্যে নাকি নানারকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে শুরু করে। নার্ভ, চোখ, মাথার অসহ্য যন্ত্রণার মতো ভয়াবহ সমস্যা তো বটেই এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। গ্লাস হারমোনিকার যারা নিয়মিত বাদকরা ও শ্রোতারা ঠিক এমনই অভিযোগ তুলতে শুরু করেন। ১৭৯৯ সালে চিকিৎসক অ্যান্টনি উইলিচ এই বাদ্যযন্ত্র নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তিনি জানান, মস্তিষ্কের বিশেষ অংশকে অতি সক্রিয় করে তোলে এর সুর। ঘুমভাব, হ্যালুসিনেশন, প্যারালিসিস এমনকি মৃত্যুর ঘটতে পারে বেশি শুনলে। বেশ কিছু মনস্তত্ত্ববিদ দাবি করেন, আত্মহত্যার মানসিকতা জাগিয়ে তোলে এই বাদ্যযন্ত্র।
১৮০৮ সালে ভিয়েনায় একটা কনসার্টে গ্লাস হারমোনিকা বাজাতে গিয়ে মঞ্চেই মৃত্যু হয় মারিয়ানা কির্চজেসনার নামে এক মিউজিসিয়ানের। মারিয়ানা জন্মান্ধ ছিলেন। ছোট থেকে মিউজিকই ছিল তাঁর সবকিছু। তৎকালীন সমালোচকরা মারিয়ানার মৃত্যুর জন্য ফ্রাঙ্কলিনের গ্লাস হারমোনিকাকে দায়ী করতে শুরু করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.