সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেড়াতে গিয়ে মাঝ সমুদ্রে উলটে গিয়েছিল যাত্রীবোঝাই নৌকা। সলিল সমাধি হয় পর্যটক দলের বেশিরভাগ সদস্যের। আর মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন মাত্র চারজন। সেই মৃত্যুঞ্জয়ীরা কীভাবে টানা এক মাস ধরে বৃষ্টির জল খেয়ে জীবনের পথে ফিরে এসেছেন, সেই কাহিনি প্রকাশ্যে এল। পাপুয়া নিউগিনির এই চার নাগরিক শেষপর্যন্ত সরকারের সাহায্যে ঘরে ফিরতে পারছেন। এই দলে রয়েছে ১২ বছরের এক নাবালিকা। উদ্ধার হওয়ার পর একটু ধাতস্থ হয়ে নিজেরাই জানালেন দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা।
গত ডিসেম্বর মাসে ক্রিসমাস উপলক্ষে পাপুয়া নিউগিনির ১১ জনের একটি দল বেড়াতে গিয়েছিল কার্টলেট দ্বীপে ছুটি কাটাতে। নৌকা করে প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে সমুদ্রের প্রবল ঝঞ্ঝার মধ্যে পড়ে নৌকাটি উলটে যায়। সলিল সমাধি হয়ে এক পরিবারের তিন সদস্য-সহ ৭ জনের। বাকি চারজন মহাসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে যুঝে ভাসতেই থাকেন।শেষমেশ একটি ছোট্ট, নির্জন দ্বীপের হদিশ পেয়ে সেখানে ঠাঁই নেন। সেটা প্রায় হাজার দুয়েক কিলোমিটার দূরে। তারপর জীবনটাই বদলে যায় তাঁদের।
খাবার বলতে নারকেল, পানীয় বলতে স্রেফ বৃষ্টির জল। এটুকু সম্বল করেই কাটতে থাকে দিন। যোগাযোগ করতে না পারায় ফেরার উপায় ছিল না। সমুদ্র দিয়ে যেসব মাছ ধরার ডিঙি যাতায়াত করছিল, তাদেরও নাগাল পাচ্ছিলেন না। এদিকে,সঙ্গে ১২ বছরের এক নাবালিকা। বারবারই তাঁরা চেষ্টা করছিলেন স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরে যাওয়ার। কিন্তু ডিঙিগুলোর কাছেও সেই সংকেত পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত একটি ডিঙি তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। ক্যালিডোনিয়া থেকে চারজনকে উদ্ধার করে হনিয়ারায় পৌঁছে দেওয়া হয়। তখন চারজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।
পাপুয়া নিউগিনির দূতাবাস হাত বাড়িয়ে দেয় সাহায্যের। হাসপাতালে ভরতি করে চিকিৎসা শুরু হয়। ডমিনিক স্ট্যালির কথায়, ”দুর্ঘটনার পর ওদের বাঁচানোর কোনও রাস্তা ছিল না। বাচ্চাটাকে দু বাহুতে আঁকড়ে ধরেও বাঁচানো গেল না। আমরা নিজেরা যে কী করে বেঁচে ফিরলাম, জানি না।” তবে ইতিহাস বলছে, প্রশান্ত মহাসাগর আগেও এভাবে অনেককেই ফিরিয়ে দিয়েছে মৃত্যুর মুখ থেকে। এই চারজন তাতে নতুন সংযোজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.