সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজস্থানের (Rajasthan) সীমান্তবর্তী বারমের জেলার দেরসার গ্রামে বহু বিবাহ (Polygamy) না করলে সামাজিক বয়কটের মুখে পড়তে হয় পুরুষদের। কোনও গল্পকথা নয়, যুগ যুগ ধরে এমন আজব রীতিই চলে আসছে এই গ্রামে।
পাক সীমান্তের কাছে ছোট্ট গ্রামটিতে ৬০০ জনের বাস। প্রতিটি পরিবারের পুরুষদের একাধিক বিয়ে। অন্তত দু’টি করে বিয়ে রয়েছে তাঁদের। কিন্ত কেন এমন রীতি? তার পিছনেও রয়েছে এক কুসংস্কার। অদ্ভুত এক গল্প।
স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, প্রথম স্ত্রী সন্তান ধারণে অক্ষম। তাই তাঁকে কার্যত বাড়ির পরিচারিকা করে রাখা হয়। দ্বিতীয় বিবাহের পর সেই বউয়ের সেবা করাই ধর্ম হয়ে দাঁড়ায় প্রথম স্ত্রীর। প্রথম বউয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও রাখেন না স্বামী। এই রীতির সূত্রপাত বহু বছর আগে। সেই সময় বিয়ের বহু বছর পরেও সন্তানের মুখ দেখেননি এক দম্পতি। পরিবারের পরামর্শে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। তার পরই ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। অন্তঃসত্ত্বা হন দুই স্ত্রী-ই। তার পর থেকে অন্তত দু’টি বিয়েই রীতি হয়ে দাঁড়ায় দেরসার গ্রামে। যে এই রীতি ভাঙার চেষ্টা করেন, তাঁকেই একঘরে হতে হয়।
তবে শুধু সন্তানধারণ নয়, এই রীতির পিছনে লুকিয়ে রয়েছে আরও এক করুণ কাহিনী। থর মরুভূমির বুকে থাকা এই গ্রামটিতে জলকষ্ট প্রচণ্ড। গ্রামে পানীয় জল মেলে না। সেই জল আনতে হেঁটে পার করতে হয় কয়েক কিলোমিটার রাস্তা। কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পক্ষে অতদূর থেকে জল বয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই প্রথম স্ত্রীকে সন্তানধারণ করতে দেয় না শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এমনটাই প্রচিলত রয়েছে।
দ্বিতীয় স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হলে প্রথম স্ত্রী তাঁর দেখভাল করে। রোদে পুড়ে জল আনতে যায় ৫ কিলোমিটার দূরে। তিনি পরিচিত হন জল স্ত্রী নামে। তবে নামেই স্ত্রী, আদপে পরিবারের পরিচারিকা হয়ে কেটে যায় তাঁর জীবন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.