সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “আমায় তুই আনলি কেন, ফিরিয়ে নে।” বলেছিলেন এক বাঙালি কবি। ইংল্যান্ডের (England) এক তরুণী তাঁর মায়ের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলায় প্রায় সমগোত্রীয় প্রশ্ন তুললেন, তাঁকে জন্ম দেওয়া হয়েছিল কেন? কেন মাকে প্রসবের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল?
মায়ের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোটি টাকার মামলা করেন তরুণী। ইতিমধ্যে সেই মামলা জিতেও গিয়েছেন। নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘটিয়েছেন মেরুদণ্ডের কঠিন রোগে আক্রান্ত ইংল্যান্ডের বছর কুড়ির তরুণী এভি টোম্বিস (Evie Toombes)। কিন্তু কেন এমন অদ্ভূত মামলা করতে গেলেন তিনি?
আসলে আর পাঁচটা মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবন নয় এভির। জন্ম থেকেই স্পাইনা বিফিডা (Spina Bifida) নামের মেরুদণ্ডের বিরল রোগে আক্রান্ত। এই রোগের ফলে কোনও কোনও দিন ২৪ ঘণ্টাই তাঁকে টিউবের সাহায্যে চলতে হয়। এভির মতে, তাঁর মতো মানুষের জন্মানোই উচিত হয়নি। সব রাগ গিয়ে পড়েছে মায়ের চিকিৎসকের উপরে। তরুণীর অভিযোগ, চিকিৎসক ড. ফিলিপ মিচেল মাকে গর্ভাবস্থায় সঠিক পরামর্শ দেননি। সেই কারণেই তিনি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন।
এভি বলেছেন, চিকিৎসক যদি তাঁর মাকে বলতেন, গর্ভের সন্তান স্পাইনা বিফিডা-র মতো কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে পারে, সেই ঝুঁকি কমাতে ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়ার খুব প্রয়োজন, তা হলে হয়তো তাঁর এই অবস্থা হত না। অথবা মা যদি সন্তানধারণ না করত, তাহলেও বিষাদময় জীবন পেতে হত না তাঁকে।
বুধবার লন্ডন হাই কোর্টে বিচারপতি মন্তব্য করেন, এভির মামলাটি নজিরবিহীন। আদালতের পর্যবেক্ষণ, যদি এভির মাকে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হত তবে তিনি পরেও সন্তানধারণ করতে পারতেন। সেক্ষেত্রে সুস্থ সন্তানেরই জন্ম দিতে পারতেন তিনি! এইসঙ্গে এভি-র যুক্তিকে সমর্থন করে চিকিৎসককে বিপুল অঙ্কের জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এভির আইনজীবী জানিয়েছেন, চিকিৎসককে কত টাকা জরিমানা করা হবে, তা এখনও নির্ধারণ করেনি আদালত, তবে সেটা বড়সড় অঙ্কই হবে। কারণ সেই টাকা দিয়েই এভির সারাজীবনের চিকিৎসা ও দেখভালের ব্যবস্থা হতে চলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.