প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভালবাসা কি বয়স মানে? স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা করেও তো ভালবাসা হয় না। সমাজের চোখে যা অসংগতিপূর্ণ, ভালবাসা তাকেই আশকারা দেয়। প্রেমের সম্মোহনী শক্তি সব প্রতিকূলতাকেই হার মানায়। তাই তো সহজেই ৬৭-তেও প্রেমে পড়া যায়। সাত পাকে বাঁধা পড়ে নতুন করে জীবন শুরু করা যায়। আর এমনই এক প্রবীণ মিষ্টি ভালবাসার সাক্ষী রইল কেরলের একটি বৃদ্ধাশ্রম।
কখনও পরিবার থেকে ব্রাত্য হয়ে তো কখনও চাপা হতাশা বুকে নিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই নেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। সেখানে অচেনা-অজানারাই হয়ে ওঠে পরিবার। সুদিন ও দুর্দিনে তাঁরাই পাশে দাঁড়ান। হয়ে ওঠেন শেষ জীবনের পরম বন্ধু। তেমনটাই হয়েছিল ষাটের কোঠা পেরিয়ে যাওয়া লক্ষ্মী আমল এবং কোচানিয়ান মেননের সঙ্গেও। স্বামীর মৃত্যুর পর বৃদ্ধাশ্রমে চলে আসেন লক্ষ্মীদেবী। আর পরিবারের থেকে ব্রাত্য কোচানিয়ানও মাথার উপর ছাদ খুঁজতে গিয়ে এই জায়গাতেই এসে পড়েন। কিন্তু দু’জন ভাবতেই পারেননি, এই বয়সে এসে প্রেমে পড়বেন। নতুন করে সংসার পাতবেন। কিন্তু প্রেম তো অতর্কিতেই আসে। তেমনটাই হয়েছিল এই দু’জনের জীবনে। চোখে-মুখে বয়সের ছাপ পড়লেও ‘দিল তো বাচ্চা হ্যায় জি’। আর সেই ভালবাসাকে স্বীকৃতি দিতে বৃদ্ধাশ্রমেই বিয়ের পিঁড়িতে বসল এই কাপল।
মজার বিষয় হল, এই কোচানিয়ানই এককালে লক্ষ্মীদেবীর স্বামীর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। মাঝখানে অনেকগুলো বছর কেটে গিয়েছে। ত্রিশূরের সরকার চালিত বৃদ্ধাশ্রমে আবার সেই হারিয়ে ফেলা বন্ধুস্থানীয় মানুষটির সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। আর ৬৫ বছর বয়সে এসে তাঁকেই মন দিয়ে বসেন লক্ষ্মীদেবী। অগ্নিকে সাক্ষী রেখেই বাঁধলেন গাঁটছড়া। মেহেন্দি থেকে সংগীত- সব আচার অনুষ্ঠানই পালিত হল। আয়োজন করলেন বৃদ্ধাশ্রমের অন্যান্যরাই। শনিবার এই প্রবীণ পরিণয়ে হাজির ছিলেন সে রাজ্যের মন্ত্রী ভিএস শিবকুমারও।
লাল বেনারসী পরে কনের সিংহাসনে বসে প্রেমিকের গালে ভালবাসার চিহ্ন এঁকে দেন লক্ষ্মীদেবী। আর সেই ছবিই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। নবদম্পতিকে বিয়ের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রশংসায় ভরিয়েছেন নেটিজেনরা। অনেকেই লিখেছেন, ‘আপনারই ভাল থাকার অনুপ্রেরণা।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.