ছবি: জয়ন্ত দাস
ধীমান রায়, কাটোয়া: মায়ার বাঁধন বড় বাঁধন। তাতেই সম্পর্ক প্রতিপালিত হয়। আবার এমন ব্যতিক্রমী ঘটনাও ঘটে, যা দেখে আশ্চর্য হয় মানুষ। এমনই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বিধানসভা কেন্দ্রের খারজুলি গ্রামে। যেখানে সারমেয় ‘মা’য়ের স্তন্যপান করে প্রাণে বাঁচল ছাগশিশু।
খারজুলি গ্রামের বাসিন্দা শেখ ফিরোজের বাড়িতে কয়েকটি ছাগল রয়েছে। তার মধ্যে একটি ছাগল দিন সাতেক আগে সন্তান প্রসব করেছে। ছাগশিশুর জন্মের পর পর মহা সমস্যায় পড়েন ফিরোজ। তাঁর কথায়, “বাচ্চা হওয়ার পর থেকে ছাগলটির স্তনে দুধ আসেনি। বাচ্চাটা কাছে গেলেই মেরে তাড়িয়ে দিত জন্মদাত্রী মা। ফলে দুধ না পেয়ে ছাগলের বাচ্চাটি মরেই যেত। কিন্তু পাশের বাড়ির তাহাসিন আমার খুব উপকার করে দিয়েছে।”
কিন্তু কীভাবে? ফিরোজের প্রতিবেশী শেখ আপেল মহম্মদের ছোট ছেলে তাহসিনের সাহায্যে। দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র তাহসিন। রোজ একটি পথকুকুর তাদের বাড়ির সামনে এলেই তাহাসিন তাকে ঘর থেকে খাবার এনে খেতে দেয়। কুকুরটিকে ‘টাইগার’ নামও দেয় সে। কয়েকদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে টাইগার এলেই তাহাসিন তার গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়। আর তখন ফিরোজের ছাগশিশুটি সারমেয়র স্তন্যপান করে।
রোজ দু’বেলা ছাগশিশুকে স্তন্যপান করানো যেন দায়িত্ব হয়ে উঠেছে তাহসিন ও টাইগারের। তাহাসিন বলে, “ওইটুকু বাচ্চা দুধ পায়নি। আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই টাইগারের কাছে দুধ খাওয়াতে নিয়ে গিয়ে দেখি টাইগার দুধ খাওয়াচ্ছে।”
সারমেয় ‘মা’য়ের দুধ খেয়ে একটি ছাগল বড় হয়ে উঠছে, বিষয়টি নিয়ে ভাতার রাজ্য প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. উষা দে বলেন, ” এটা একটা ব্যতিক্রমী ঘটনা। সচরাচর দেখা যায় না। খোঁজ নিয়ে দেখব।” সাত দিনের ছাগশিশুটি এখন বহাল তবিয়তে রয়েছে। সে এখন মায়ের কাছে ঘেঁষতেও চায় না। ‘টাইগার’কেই যেন মা হিসেবে ভেবে নিয়েছে।
দেখুন ভিডিও –
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.