সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুধবার ছিল লাল্টু বাবার ‘মুণ্ডন’ অনুষ্ঠান। গ্রামের শ’পাঁচেক লোক অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন গোমতী নদীর ঘাটে। সঙ্গে নানা উপহার। ১৫ বছর সন্তানহীন থাকার পরে ‘ছেলে’-কে পেয়ে উৎফুল্ল বিজয়পাল ও রাজেশ্বরী। এই পর্যন্ত বিষয়টা সকলের কাছেই বেশ চেনা। কিন্তু তফাত আছে। লাল্টু বাবা কোনও মানুষ নয়। সে না-মানুষ। একটি বাছুর! এমনই অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) এক গ্রামে।
যুগ যুগ ধরেই গরু (Cow) হিন্দুধর্মে পূজিত ‘মাতা’ হিসেবে। এবার তাকেই সন্তান হিসেবে গ্রহণ করেছেন ওই দম্পতি। বিজয়পালের সাফ কথা, ‘‘যদি আমরা গরুকে মা হিসেবে গ্রহণ করতে পারি, তাহলে তার বাছুরকে সন্তান হিসেবে গ্রহণ করতে পারব না কেন? আমি ওকে আমার ছেলে হিসেবেই দেখেছি। জন্ম থেকেই আমাদের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ও। আমাদের প্রতি লাল্টুর ভালবাসা নিঃশর্ত আর খাঁটি।’’
লাল্টুর মা’কে বিজয়পালের পরিবারে নিয়ে আসেন তাঁর বাবা। কিছুদিন আগে সেই গরুটি মারা যায়। এরপরই লাল্টুকে পাকাপাকি ভাবে ‘সন্তান’ হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন বিজয়পাল ও তাঁর স্ত্রী। শাহজাহানপুরে নিজেদের বাড়িতে একেবারেই একাই থাকেন ওই দম্পতি। বিজয়পালের বাবা-মা দু’জনেই মারা গিয়েছেন। বিয়ে হয়ে গিয়েছে ছোট দুই বোনের। এই পরিস্থিতিতে লাল্টু বাবাকে ঘিরেই নতুন করে বাঁচার রসদ খুঁজছেন তাঁরা।
এমন অভূতপূর্ব ভালবাসা দেখে আপ্লুত স্থানীয়রাও। রত্নেশ মিশ্র নামে এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘মুণ্ডনের অনুষ্ঠানে এসে আমরা অবাক হয়ে গিয়েছি। বহু মানুষ এসেছেন। আমরা সকলেই খুশি ওই দম্পতি ও তাঁদের সন্তানকে দেখে।’’
প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বরে যোগী আদিত্যনাথের সরকার ঘোষণা করে, এবার থেকে কেউ গরুকে দত্তক নিলে দৈনিক ৩০ টাকার ভাতা পাবেন তিনি। সর্বোচ্চ চারটি বাছুর দত্তক নেওয়া যাবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.