সৌরভ মাজি, বর্ধমান: আসছে সুপার সাইক্লোন আমফান। বুধবারের বিধ্বংসী ঝড়ের পূর্বাভাস আমরা অর্থাৎ মনুষ্যকুল অন্তত দু, তিনদিন আগে থেকে পেয়েছি। কিন্তু মনুষ্যেতর জীব তো বিজ্ঞানীদের হিসেব নিকেশ করা পূর্বাভাস বোধগম্য হয় না। তারা তাদের নিজস্ব ইন্দ্রিয়জাত অনুভূতি থেকে সবটা বুঝে যায়। কিন্তু আমফানের তীব্রতা কতটা, তা বোধহয় টের পায়নি বর্ধমানের মালঞ্চপল্লির বেড়াল। তাই চুপচাপ কার্নিশে ঘুমোচ্ছিল। কিন্তু ঝড়ের দাপট আসতেই লাফিয়ে উঠে পড়ে পাশের নারকেল গাছে। সেখানেই ছিল ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময়। শেষে পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়।
দিনটা ছিল বুধবার। বাংলার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ইতিহাসে এক কালো দিন। ঘণ্টায় প্রায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে ঝড় এ রাজ্যের উপর দিয়ে কবে বয়ে গিয়েছে, মনে করতে পারবেন না কেউ। সুপার সাইক্লোন যে এতটা ভয়াবহ হবে, সে বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক করেছিল হাওয়া অফিস। সেইমতো মানুষজন নিজেদের চার দেওয়ালে আড়ালে আটকে ফেললেও কুকুর, বিড়ালরা তো তেমনটা নয়। বিশেষত যারা একেবারেই অনাথ। পোষ্য হলে তবু ঘরে আটকে রাখা যায়। কিন্তু বর্ধমানের মালঞ্চপল্লির এই মার্জার অধ্যাপক দম্পতির বাড়িতে ঘোরাফেরা করলেও ঘরে তো থাকে না। বরং কার্নিশ, উঠোনে থাকতেই পছন্দ করে। আমফানের দিনও সে আরামের কার্নিশে ঘুমোচ্ছিল। কিন্তু আচমকা ঝড়ের দাপটে সে চমকে ওঠে। পর মুহূর্তেই লাফিয়ে উঠে যায় পাশের নারকেল গাছে।
সেখানেই ছিল টানা ২৪ ঘণ্টা। আর সেই গাছের মাথা থেকেই তারস্বরে ডেকে সাহায্য চাইছিল। ঝঞ্ঝা থেমে সব শান্ত হওয়ার পর যে অধ্যাপক দম্পতির বাড়িতে তার যাতায়াত, সেখানকার সদস্যরাই তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। বর্ধমানের সংগঠন ‘ভয়েস ফর দ্য ভয়েসলেস’-এর সদস্যদের কানে পৌঁছয়। তাঁরাই তৎপর হয়ে গাছ থেকে নামিয়ে আনে বিড়ালটিকে। তবে শত ঝড়ঝঞ্ঝা সহ্য করেও দিব্যি সুস্থ রয়েছে সাদা ধবধবে মার্জার। আমফান তাকে ভয় দেখাতে পারলেও, কাবু করতে পারেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.