সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঢেউ খেলানো সবুজ পাহাড়ের গা বেয়ে ছুটে চলা ট্রেন। কালো ধোঁয়া ওড়ানো কয়লার ইঞ্জিনের কু ঝিকঝিক শব্দ। কখনও ঝুপ করে নেমে আসা টানেলের অন্ধকার। কখনও ঝকঝকে নীল আকাশ। তিন কোচের ছোট্ট ট্রেনে ১২০টি আসনে সওয়ারি মোটে দু’জন। একজনের নাম গ্রাহাম উইলিয়াম লিন (৩০) ও অন্যজন সিলভিয়া প্লাসিক (২৭)। দু’জনেই ব্রিটেনের বাসিন্দা। সদ্যবিবাহিত দম্পতি। মধুচন্দ্রিমায় বেড়াতে এসেছেন ভারতে। নীলগিরির কোলে পাহাড়ি পথে রেল ভ্রমণে।
নীলগিরিকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে পাহাড়ি পথে চার্টার্ড রেল পরিষেবা চালু করেছে ভারতীয় রেলওয়ের দক্ষিণ রেল শাখার সালেম ডিভিশন। এই পরিষেবার প্রথম গ্রাহক এক ব্রিটিশ দম্পতি৷ আইআরসিটিসি-র মাধ্যমে আস্ত তিন কামরার একটি ট্রেনই বুক করে ফেলেছেন উইলিয়াম লিন ও তাঁর স্ত্রী সিলভিয়া প্লাসিক৷ মেত্তুপালায়াম থেকে উটি (৪৮কিমি) যেতে খরচ পড়েছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। তিন কোচের এই ট্রেনে ১২০টি আসন। মধুচন্দ্রিমায় সব আসনই নিজেদের জন্য সংরক্ষণ করে নিয়েছিলেন ওই ব্রিটিশ দম্পতি। তাই ট্রেনে আর কোনও যাত্রী ছিল না৷
এর আগে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত নীলগিরি মাউন্টেন রেলওয়ের চার্টার্ড পরিষেবা চালু ছিল৷ কিন্তু পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০০২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ফের রাত্রিকালীন চাটার্ড রেল পরিষেবা চালু হয়েছিল নীলগিরিতে৷ কিন্তু সেই পরিষেবাও বন্ধ হয়ে যায়৷ গত শুক্রবার থেকে নতুন করে নীলগিরির পাহাড়ি পথে শুরু হল চাটার্ড রেল পরিষেবা৷ আগের দু’বারই রেলপথ ছিল মেত্তুপালায়ম থেকে কুন্নুর পর্যন্ত৷ এখন তা সম্প্রসারিত করা হয়েছে উটি পর্যন্ত৷ ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তা পেরোতে সময় লাগে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা। পথে পড়ে ১৩টি সুড়ঙ্গ ও জঙ্গল। শনিবার সকাল ৯.১০-এ মেত্তুপালায়াম স্টেশন থেকে ছেড়ে দুপুর ২.৪০-এ উটিতে পৌঁছয় ট্রেন৷ পথে অবশ্য একবার ইঞ্জিন বদলও করতে হয়। তিন কোচের ট্রেনটি মেত্তুপালায়ম থেকে কুন্নুর পর্যন্ত স্টিম ইঞ্জিনে চললেও বাকি পথ অর্থাৎ কুন্নুর থেকে উটি পর্যন্ত চলে ডিজেল ইঞ্জিনে। প্রথম যাত্রা। তার ওপর প্রথম আরোহী মধুচন্দ্রিমায় আসা ভিনদেশী দম্পতি। যাঁরা কি না গোটা ট্রেনটাই বুক করে নিয়েছেন! তাই জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয় তাঁদের। একবার নয়, দু’বার। প্রথমে যাত্রা শুরুর আগে মেত্তুপালায়মে এবং পরে মাঝপথে কুন্নুরে রেলের আধিকারিকরা স্বাগত জানান নবদম্পতি উইলিয়াম ও সিলভিয়াকে।
[ ক্রমশ বাড়ছে জলস্তর, মহাকাশ থেকে হিমবাহের গলন নজরে রাখবে নাসা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.