সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাথায় পাগড়ি, চোখে সানগ্লাস, রঙচঙে বিয়ের শাড়ি পরে তলোয়ার উঁচিয়ে, ঘোড়া ছুটিয়ে বিয়ে করতে গেলেন দুই বোন। আর সেই ছবি নিজেরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন মধ্যপ্রদেশের এই দুই কনে সাক্ষী ও সৃষ্টি। তাঁদের ছবি দেখে উচ্ছ্বসিত নেটিজেনরা। ছেলে ও মেয়েদের সমান সম্মান ও অধিকার আছে, এই চিন্তাধারা থেকেই এমন ভাবে বিয়ে করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সাক্ষী ও সৃষ্টি। তাঁদের মতে, ‘দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ নয়। এখন ‘দুলহা লে জায়েঙ্গে’র জমানা।
হাতে তরোয়াল নিয়ে ঘোড়ায় চেপে বিয়ে করতে যাওয়ার রীতি রয়েছে রাজপুত পুরুষদের। পাগড়ি বেঁধে রাজবেশে ব্যান্ড পার্টি-বরযাত্রীদের নিয়ে কনের বাড়িতে বিয়ে করতে বেশিরভাগ ভারতীয় জাতিরই রীতি। আর শাড়ি-লেহঙ্গা-ওড়না-চোলিতে মুখ ঢেকে থাকা কনেকে দেখতেই অভ্যস্ত সবাই। সেখানে স্বয়ং কনে তলোয়ার হাতে, ঘোড়ায় চড়ে বরের বাড়িতে বিয়ে করতে যাওয়ার ঘটনা সত্যিই নজিরবিহীন। মহিলা ও পুরুষ দু’জনই সমান। সেই বার্তা দিতেই এভাবে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন দুই কনে।
গত ২২ জানুয়ারি মধ্যপ্রদেশের খান্ডওয়ায় পাতিদার সম্প্রদায়ের দুই বোন সাক্ষী ও সৃষ্টির বিয়ে ছিল। জানা গিয়েছে, দুই বোন ঘোড়ায় চেপে কনেযাত্রীদের নিয়ে বরের বাড়ি পৌঁছয়। বরযাত্রীর মতো এখানে কনেযাত্রীরা কনের ঘোড়ার পিছনে নাচতে নাচতে বরের বাড়ি পৌঁছয়। দুই বোনের কাছাকাছি এলাকায় বিয়ে হয়। দু’জনে বাড়ি থেকে একসঙ্গে বিয়ে করতে বের হয়। তারপর মাঝ পথ থেকে কনেযাত্রী দু’ভাগ হয়ে দু’জনের সঙ্গে বরের বাড়ি যায়। সেখানেই বসে বিয়ের আসর।
তবে সাক্ষী ও সৃষ্টির বাবার মতে, বহু বছর ধরেই কনেযাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে হইহই করতে করতে বরের বাড়িতে কনের বিয়ে করতে যাওয়ার রীতি রয়েছে পাতিদার সম্প্রদায়ের। তাঁর কথায়, “এই ঐতিহ্যবাহী রীতিকে ঢাল করে সকলের উচিত সরকারের বেটি বাঁচাও কর্মসূচিকে সফল করা। সমাজে সব মেয়েদেরই ছেলের মতো সমান অধিকার ও সম্মান দেওয়া উচিত। বিয়ের মতো সামাজিক মহার্ঘ অনুষ্ঠানে আমার দুই মেয়েকে এই সমান অধিকারের বার্তা দিতেই এভাবে বিয়ে দিয়েছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.