সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যা কিছু পুরনো, তা বাতিল করে নতুন জিনিস ঘরে আনাই দস্তুর। কিন্তু পুরনো সামগ্রী দিয়েও নতুন করে কিছু তৈরি হয়, তা আমরা বোধহয় মাঝেমধ্যে ভুলে যাই। তবে তা ভোলেননি অসমের (Asam) যুবক অভিজিৎ দোওরা। তিনি পুরনো টেলিভিশন সেট অর্থাৎ কাঠের বাক্সওয়ালা টিভি দিয়েই তৈরি করে ফেলেছেন ছোট ছোট ঘর।
ভাবছেন তো ওই ঘরে আবার কেউ থাকতে পারে নাকি? আসলে যাদের জন্য অভিজিতের এই উদ্যোগ, তারা কেউ আমার-আপনার মতো না, তারা চারপেয়ে। অভিজিতের তৈরি ওই কাঠের ঘরগুলির বাসিন্দা পথকুকুরদের (Stray dogs) দল। শীত, বৃষ্টিতে তারা এখন দিব্যি ওই ঘরে আশ্রয় নিতে পারে। অসমীয়া যুবকের এহেন উদ্ভাবনী আপাতত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
কীভাবে এমন ভাবনা মাথায় এল অভিজিতের? প্রাণোচ্ছ্বল যুবক জানাচ্ছে, এটা আজকের ভাবনা মোটেই নয়। বৃষ্টি ছোট্ট ছোট্ট কুকুরছানাদের ভিজতে দেখতেন তিনি। ছানাকে নিয়ে একটু আশ্রয়ের জন্য মা কুকুরদের দৌড়ঝাঁপ তাঁকে কষ্ট দিত। ভাবতেন, কীভাবে ওদের সুবিধামতো একটা মাথার ছাদ গড়ে দেওয়া যায়। এদিকে, অসমের একটু প্রত্যন্ত অঞ্চলেও অনেক ঘরে কাঠের বাক্সের সাদাকালো বা রঙিন টিভি বাতিল করে এলসিডি বা এলইডি টিভি আনার চল হয়েছে। আর সেইসব টিভি সেটকেই কাজে লাগালেন অভিজিৎ। সেগুলোকেই রূপ দিলেন ছোট ছোট ঘরে, যার মধ্যে অনায়াসে কুকুরছানারা থাকতে পারে। নাম দিলেন – ‘বাটর ঘর।’ সেসব ঘর তিনি দীর্ঘ, খোলা রাস্তা, যার ত্রিসীমানায় কোনও ছাউনি নেই, তার ধারে বিভিন্ন জায়গায় রেখে দেন।
চারপেয়ের দলও কীভাবে যেন বুঝতে পারে যে তাদেরই জন্য ঘরগুলো বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যস, আর কী! ছানাদের নিয়ে ঢুকে পড়ে সারমেয়র দল। তীব্র শীতে এই ঘর বড়ই আরামদায়ক তাদের জন্য। নিজের একটা কাজ নিমেষে এতটা সফল হয়েছে দেখে আনন্দিত অভিজিৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় তা প্রকাশ করেন। নিজে কীভাবে কাজটি করেছে, তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে নেটিজেনদেরও আহ্বান জানান যাতে তাঁরাও নিজের এলাকায় কুকুরদের সহজেই সাহায্য করতে পারেন।
View this post on Instagram
তাঁর এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় আপাতত ভাইরাল। অসমীয়া যুবককে ধন্য ধন্য করছেন নেটিজেনরা। তবে কাজ এখানেই সমাপ্ত নয় বলে মনে করেন অসমীয়া যুবক। তিনি বলছেন, ”আরও পুরনো টিভি সেট জোগাড় করছি, যাতে কাঠের ফ্রেম দিয়ে আরও বেশি সংখ্যায় ওদের জন্য ঘর বানিয়ে দিতে পারি।” এবার তাঁর কাজের সঙ্গী হয়ত হবেন নানা প্রান্তের নানা জন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.