সুমন করাতি, হুগলি: “গোঁফকে বলে তোমার আমার- গোঁফ কি কারও কেনা?/ গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা। সুকুমার রায়ের বিখ্যাত ছড়া ‘গোঁফচুরি’ পড়েননি, এমন বাঙালি পাওয়া কঠিন। তথাপি বাঙালি মাত্রই কি গোঁফের মর্ম বোঝেন! অনেকেই তো ক্লিন শেভড। হুগলির কানাইপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা অশোক মাহাতোকে নিয়ে সেই চালিয়াতি চলবে না। গোঁফের মর্জাদা তাঁর মতো করে ক’জনই জানেন। বিরাট গোঁফের পরিচয়ই তো তাঁর পরিচয়।
স্থানীয়দের কাছে অশোক নন, তিনি এলাকার গর্ব ‘গোঁফওয়ালা’। বছর পঞ্চান্নর প্রৌঢ় গোঁফের শক্তিতে তরুণদেরও হার মানান। গোঁফ দিয়ে কখন তোলেন ভারী থান ইট, কখনও বা লোহার বাটখাড়া। এমনকী গোঁফের তাকতে হেলায় টেনে নিয়ে যান টোটো। যা দেখে হতবাক হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না প্রত্যক্ষদর্শীদের।
পেশায় টোটোচালক অশোক ছোটবেলাতেই গোঁফের প্রেমে পড়েন। যুবক বয়স থেকেই গোঁফ বাড়াতে শুরু করেন। এর জন্য কম গঞ্জনা সহ্য করতে হয়নি তাঁকে। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াও হয়েছে। তবু প্রিয় গোঁফের অযত্ন হতে দেননি কখনও। তাই তো আজ দুটো এককেজির বাটখাড়া, ১০ কেজি ওজনের ইট তোলেন অনায়াশে। এমনকী গোঁফের সঙ্গে দড়ি বেঁধে লোক বসা অবস্থায় কয়েক মিটার দূরে টেনে নিয়ে যান টোটো। স্বামীর এহেন কেরামতিতে আজ গর্বিত স্ত্রী অঞ্জনা মহাতো। প্রতিবেশীরাও প্রশংসায় পঞ্চমুখ। যাকে নিয়ে এত কথা, সেই অশোকও জানিয়ে দেন, গোঁফের কারণেই লোকে তাঁকে একডাকে চেনে। একথা বলতে গিয়ে ঝলমল করে ওঠে হুগলির কানাইপুরের প্রৌঢ়ের চোখ। খাঁটি সর্ষের তেলের পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা বাজখাই গোঁফেও তখন খুশির ঝলক!
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.