সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভিক্ষা হল হাত পাতার পেশা। অন্যের দয়ায় বাঁচা। চাওয়াই যে জীবনের দর্শন। একজন ভিখারি কি পালটা হাত উপুর করতেও জানেন! একাজ সবাই না পারলেও টুলু বেহারা করে দেখালেন। ওড়িশার (Odisha) ফুলবনীর (Phulbani) বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দিরে (Jagannath Temple) চত্বরে গেলেই দেখা মেলে তাঁর। গত কুড়ি বছর ওখানেই ভিক্ষা করছেন। বয়স হয়েছে। এবার ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। এমন ভাবনা থেকে জীবনের যাবতীয় সঞ্চয় ১ লক্ষ টাকা ওই জগন্নাথ মন্দিরেই দান করলেন টুলু। গোটা ঘটনায় হতবাক খোদ ফুলবনীর জগন্নাথ মন্দির কমিটি।
টুলু আদতে কটকের বাসিন্দা। প্রেমের সম্পর্কের পর প্রফুল্ল বেহারাকে বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু কয়েক বছর পরেই মৃত্যু হয় প্রফুল্লর। এরপর একটা সময় থেকে ফুলবনীর বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দির চত্বরে ভিক্ষা করা শুরু করেন টুলু। এভাবেই কেটে গিয়েছে ২০ বছর। ভিক্ষার উপার্জন থেকে কিছু টাকা সরিয়ে পোস্ট অফিসে সঞ্চয় করতেন টুলু। সম্প্রতি জানতে পারেন সঞ্চয় ১ লক্ষ টাকার গণ্ডি ছাড়িয়েছে। এরপরেই সিদ্ধান্ত নেন, যেখানে থেকে পেয়েছেন সেখানেই ফিরিয়ে দেবেন যাবতীয় সঞ্চয়। কৃতজ্ঞচিত্তে নিবেদন করবেন ঈশ্বরকে। টুলুর যুক্তি, জীবনের অধিকাংশ কেটে গিয়েছে। আর ওই টাকার প্রয়োজন নেই।
সংবাদমাধ্যমে টুলু বেহারা বলেন, “আমি আমার অস্তিত্ব এবং বেঁচে থাকার জন্য বিশ্বজগতের প্রভু জগন্নাথের কাছে ঋণী। আমি জীবনের শেষ ধাপে রয়েছি। টাকা দিয়ে কি করব, তাই সবটাই সর্বশক্তিমানকে দিয়ে দিলাম।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামীর মৃত্যুর পর একটা সময় পর্যন্ত টুলু কাজ করতেন। পরবর্তীকালে শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখনই বাধ্য হয় জগন্নাথ মন্দির চত্বর ভিক্ষা করে শুরু করেন তিনি। এরপর থেকে কিছু কিছু করে সঞ্চয় করতেন।
টুলু মন্দিরে অর্থ দান করতে চাইলেও শুরুতে গরিব ভিখারির থেকে টাকা নিতে চায়নি মন্দির কমিটি। ফুলবনী জগন্নাথ মন্দির কমিটির প্রেসিডেন্ট সুনাসির মহাপাত্র বলেন, উনি জোর করায় কমিটি অর্থ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। ধনু সংক্রান্তির দিন অর্থদান পর্ব হয়। এদিকে ১৩ শতকের মন্দিরটিতে আগামী মাস থেকে স্মার্টফোন নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মন্দির কমিটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.