অর্ণব দাস, বারাসত: একটি পা নেই। কিন্তু রামমন্দির উদ্বোধনের সাক্ষী হওয়ার ইচ্ছে ছিল শুরু থেকেই। তাই এক পায়েই সাইকেল চালিয়ে অযোধ্যার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করল গোবরডাঙার সৌমিক গোলদার। তাঁর ইচ্ছেশক্তিকে কুর্নিশ জানিয়েছে পরিবার, পরিচিত এবং এলাকার বাসিন্দারা। সঙ্গে গিয়েছেন আরও এক যুবক।
স্থানীয় এবং পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গোবরডাঙা বাবুপাড়ার বাসিন্দা সৌমিক গোলদার। ২০২০ সালে তাঁর ডান পায়ে ক্যানসার ধরা পড়ে। তার পর দীর্ঘ দুবছর ধরে চলা চিকিৎসায় সাড়াও মিলছিল। কিন্তু ২০২২ সালে স্কুটি করে যাওয়ার পথে পড়ে যাওয়ায় ঘটে বিপত্তি। আঘাত লাগে পায়ে বসানো প্লেটে। সেখানে ইনফেকশন হয়ে তা গোটা পায়ে ছড়িয়ে পরে। চিকিৎসকরা কোনও উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে সৌমিকের ডান পা বাদ দেন। তার পর থেকে বাঁ পায়ের উপর ভরসা করেই শুরু হয় যুবকের জীবন।
অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির ছবি দেখে গোবরডাঙার এই যুবকের ইচ্ছে জাগে উদ্বোধনের মুহূর্তের সাক্ষী হওয়ার। পরিচিত এবং বন্ধুরাও তাঁকে উৎসাহ জোগায়। কিন্তু এতটা পথ একপায়ে সাইকেল চালিয়ে কীভাবে যাবে, তা ভেবে বাবা বাসুদেব গোলদার এবং মা ইতিকাদেবী ছেলেকে বহুবার বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ছেলের ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মানেন তারা। সৌমিক তার মা-বাবাকে বোঝাতে সক্ষম হন। এরই মধ্যে সে কলকাতায় লক্ষ্য কন্ঠে গীতা পাঠেও গিয়েছিলেন একপায়ে স্কুটি চালিয়ে। ৯ জানুয়ারি অযোধ্যার উদ্দেশে পাড়ি দিলেন যুবক।
সৌমিক বলেন, “শ্রীরামচন্দ্র দীর্ঘ পাঁচশো বছর পরে ফিরছেন তাঁর রাজ্যে। ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে পাড়ি দিচ্ছি অযোধ্যায়। পরিবেশ দূষণ রোধের বার্তা দিতেই সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি সাইকেল চালালে শরীর সুস্থও থাকে। এক পায়ে সাইকেল চালিয়ে যাব ঠিক করার পর পরিবার প্রথমে চায়নি। কিন্তু বোঝানোর পর পরিবারই আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। গোবরডাঙাবাসীর থেকেও উৎসাহ পেয়েছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.