সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাপান ঘুরতে যাচ্ছেন? সফর-তালিকায় হোক্কাইডো রয়েছে কি? তাহলে ‘কেন কুন’-এর সঙ্গে দেখা করতে ভুলবেন না যেন! স্যাপ্পোরো শহরেই দেখা মিলবে এই চারপেয়ে দোকানির। আর হ্যাঁ, সুস্বাদু ‘রোস্টেড’ মিষ্টি আলুর দোকানটা কিন্তু সে-ই চালায়! আজ্ঞে না! ভুল কিছু পড়েননি। সত্যিই সারমেয় হয়েও ‘কেন কুন’ই দোকানের সর্বেসবা। উচ্চতায় সে মেরেকেটে দেড় ফুট। গায়ের রং উজ্জ্বল সোনালি। আদতে, শিবা ইনু গোত্রের এই সারমেয় দোকানে দিনভর থাকে। ক্রেতা এলে দু’পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ায়। ‘অ্যাটেন্ড’ করে। তার ছোট্ট দোকানের সামনে একটি বাক্সে থরে থরে সাজানো থাকে ‘রোস্ট’ করা মিষ্টি আলু। সেই বাক্স খুলে নিজেদের পছন্দমতো খাবার বেছে নেন ক্রেতারা। তার পাশেই থাকে আরও একটি ছোট বাক্স, যেখানে ক্রেতাদের মূল্য চোকাতে হয়। এমনিতে খাবারের দাম ১০০ ইয়েন (৬৮ পেন্স)। ক্রেতাদের সেই নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থই দিতে বলে কেন কুন। তবে, ভাষায় নয়। বকলমে। আসলে, দোকানে টাঙানো একটি সাইনবোর্ডে লেখা থাকে এই নির্দেশ। সেখানে লেখা থাকে, “আমি তো সারমেয়। তাই বাকি অর্থ হিসাব করে ফিরিয়ে দিতে পারব না।” বেশিরভাগ ক্রেতা সেই নির্দেশ পালন করে মিষ্টি আলুর যা দাম, তাই বাক্সে রাখেন। কিন্তু, এর পাশাপাশি অনেকেই বাড়তি ইয়েন বাক্সে রেখে দেন। বাড়তি টাকা কেন কুনের খাবার কিনতে ব্যয় করা হয়।
[আরও পড়ুন: বৃথা ভারতের ডসিয়ের, যথারীতি জঙ্গি শিবিরের অস্তিত্ব অস্বীকার পাকিস্তানের]
কিন্তু একটা সারমেয় কীভাবে সুষ্ঠুভাবে দোকান চালায়? হিসাবের গরমিল সে কীভাবে বোঝে? কোনও ক্রেতা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কম অর্থ দেয়, তাহলে কেন কুন কীভাবে তাকে ধরে? পিছু নেয়, সপাটে তাড়া করে শাস্তি দেয় নাকি বেছে নেয় অন্য কোনও পথ?– এই প্রশ্নগুলো যে কারও মাথায় ঘোরা স্বাভাবিক। উত্তর, কোনওটাই না। কেন কুন এ সবের কিছুই করে না। কারণ প্রয়োজন পড়ে না। এই দোকানে সততাই সম্বল। সেটাই পুঁজি। তাই, এখনও পর্যন্ত হিসাবের কোনও গরমিল এই দোকানে ঘটেনি। প্রভুভক্ত এবং বিশ্বাসী কেন কুনের সারল্যে মুগ্ধ সব ক্রেতাই সঠিক দাম দিয়ে এখান থেকে জিনিস কেনেন। বরং নির্ধারিত মূল্যের বেশি অর্থ প্রদান করার ঘটনা স্যাপ্পোরো শহরের এই দোকানে বেশি ঘটে। দিন শুরু হলে কেন কুন—এর মালিক তাকে দোকানে রেখে যান। তার পর থেকে সন্ধ্যা নেমে আসা পর্যন্ত এই ‘সৎ’ সারমেয় দোকান সামলায়। ক্রেতাদের ‘অ্যাটেন্ড’ করে। দু’পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে তাদের সাহচর্য্য দেয়। সন্ধ্যা নেমে এলে মালিক ফের দোকানে আসেন। ঝাঁপ বন্ধ করে, নিজের প্রিয় পোষ্যটিকে নিয়ে বের হন ‘ওয়াক’—এ। সারা দিনের খাটনির পর সেই মূল্যবান সময়টুকু তখন শুধুই ওদের ব্যক্তিগত।
[আরও পড়ুন: বিলুপ্তির পথে প্রকৃতিবন্ধু মৌমাছি, ব্রিটেনে বিপদ সংকেত]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.