Advertisement
Advertisement
Tamil Nadu woman

৩০ বছর ধরে পুরুষ সেজে! মেয়েকে মানুষ করতে মায়ের আশ্চর্য লড়াই

বিয়ের ১৫ দিনের মাথায় মৃত্যু হয় স্বামীর, এরপর থেকেই ছদ্মবেশে।

A Tamil Nadu woman disguised herself as man for 3 decades to raise daughter | Sangbad Pratidin
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:May 15, 2022 3:11 pm
  • Updated:May 15, 2022 3:19 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যে জীবন সুন্দর, সেই জীবনই সময়ে সময়ে দাঁত-নখ বার করা ভয়ংকর। তরুণী বিধবা মা আর সদ্যজাত কন্যাসন্তানের সংসারের দিকে কুনজর ছিল সমাজের ‘কাক-শকুন-চিলে’র। সেই লড়াই জিততে, মেয়ের ও নিজের সুরক্ষায় আশ্চর্য কৌশল নিয়েছিলেন মা। একজন মা-ই হয়তো এমনটা পারেন! মেয়েকে মানুষ করতে পুরুষের সেজে কাটিয়ে দিলেন তিন দশকের বেশি সময়। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) এই ঘটনা। যারপর শোরগোল পড়ে গিয়েছে বর্তমানে ৫৭ বছরের প্রৌঢ়া পেচিয়াম্মলকে (Pechiyammal) নিয়ে।

গল্পের যখন শুরু, তখন কুড়ি বছরের তরুণী পেচিয়াম্মল। থুথুকুডি জেলার কাতুনায়াক্কানপট্টি গ্রামের বাসিন্দা। সদ্য বিয়ে হয়েছে। কিন্তু জীবনে অন্ধকার ঝুপ নামে করে। বিয়ের ১৫ দিনের মাথায় মারা গেলেন স্বামী। কিছুদিন পর পেচিয়াম্মল বুঝতে পারেন তিনি গর্ভবতী। সময় মতো ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। এরপরেই সমস্যার সূত্রপাত। নিজের ও সন্তানের ভরণপোষণে কাজ খুঁজতে হয় তরুণীকে। কিন্তু কাজের জায়গায় হেনস্তার স্বীকার হন বারবার। হেনস্তার কারণ অসহায় বিধবা তরুণী! যার পাশে কেউ নেই। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘কিশোরের গোপনাঙ্গে হাত দেওয়া, চুমু খাওয়া অস্বাভাবিক যৌনতা নয়’, মন্তব্য হাই কোর্টের]

এরপরই বাধ্য হয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেন পেচিয়াম্মল। দ্বিতীয় বিয়ে না করে একা মেয়েকে মানুষ করতে পুরুষের ছদ্মবেশ গ্রহণ করেন। বদলে ফেলেন নাম। পেচিয়াম্মল হয়ে যান মুথু। লম্বা চুল কেটে ফেলেন। স্থানীয় ছেলেদের মতো লুঙ্গি আর শার্ট পরা শুরু করেন। এবার কাজ পেতে অসুবিধা হয়নি। কাজের জায়গায় হেনস্তার তো কথাই নেই। এভাবেই চায়ের দোকানের কর্মী থেকে হোটেল ‘বয়ে’র কাজ, বহু জায়াগায় কাজ করে নিজের ও সন্তানের সংসার টানেন পেচিয়াম্মল ওরফে মুথু। প্রৌঢ়া জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে বিষয়টি ‘স্বাভাবিক’ হয়ে যায়। তাঁকে সবাই ‘আন্নাচি’ বলে ডাকতেও শুরু করে। অচেনা পুরুষকে এই নামেই সম্বোধন করেন স্থানীয়রা।

[আরও পড়ুন: মূল্যবৃদ্ধির জের, উজ্জ্বলা যোজনায় রান্নার গ্যাস ভরতে পারেননি ৯০ লক্ষ গ্রাহকই]

এটুকু শুনে মজার লাগলেও হাজার অস্বস্তি ডিঙোতে হয়েছে পেচিয়াম্মলকে। পুরুষের ছদ্মবেশে নেওয়ায় বাসে মহিলা সিটে বসতে পারতেন না। পথেঘাটে পুরুষ শৌচালয়ই ব্যবহার করতে হত তাঁকে। রাজ্য সরকার মেয়েদের জন্য বাসযাত্রা বিনামূল্যে করে দিলেও, তাঁর অর্থকষ্ট থাকলেও টিকিট কাটতে হত পেচিয়াম্মলকে। এমনকী লোকের মন থেকে সন্দেহ দূর করতে ভোটার কার্ড, আধার কার্ডেও পেচিয়াম্মল পুরুষ, নাম মুথু।

পেচিয়াম্মল ওরফে মুথুর এই লড়াই কাজে এসেছে। তিনি মেয়েকে পড়াশুনো শিখিয়েছেন। তাঁর বিয়েও দিয়েছেন। তামিলনাড়ুর এই আশ্চর্য মা বলেন, “আমি সব ধরনের কাজ করেছি। মেয়েকে সুরক্ষিত রাখতে চেয়েছিলাম। তাঁর ভবিষ্যতের কথা ভেবেছিলাম। যাবতীয় কষ্ট সহ্য করেছি মেয়ের মুখ চেয়ে। আমার কষ্ট সার্থক হয়েছে। এই পরিচয়েই বাকি জীবন কাটাতে চাই। এমনকী মৃত্যুর পরেও যেন আমাকে এভাবেই চেনে লোকে।” পুরুষ হিসেবেই সরকারি ভাতা পেতে চান পেচিয়াম্মল।

পেচিয়াম্মলের মেয়ে শানমুগাসুন্দরীও চান মায়ের ইচ্ছে পূর্ণ হোক। শানমুগাসুন্দরীর কথায়, “আমার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন মা। আমি চাই প্রৌঢ় পুরুষদের প্রাপ্য ভাতা যে মা পান।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement