নন্দন দত্ত, সিউড়ি: এক ক্যালেন্ডারেই পৃথিবীর সব তারিখ। সাত জন্মেও যার হিসাবের গরমিল হবে না। এমনই সহজ, সরল, আধুনিক প্রযুক্তির ‘অনন্ত ক্যালেন্ডার’ বানিয়ে ভারতীয় পেটেন্ট অর্জন করলেন সিউড়ির ছাত্র আত্রেয় ঘোষাল।
সিউড়ি সেহেড়াপাড়ার বাসিন্দা আত্রেয় জয়পুরের মণিপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের প্রথম বর্ষের ছাত্র। সিউড়ির একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যমের ছাত্র আত্রেয় বরাবরই গণিতের প্রতি বাড়তি আকর্ষণ বোধ করেন। প্রথম বর্ষে তাঁদের কলেজ থেকে একটি নতুন কিছু প্রকল্প করার নির্দেশ দেয়। তখনই তাঁর মাথায় আসে বন্ধুর একটি সাইকেল রিঙের কথা। আত্রেয় জানান, ‘‘বন্ধুর সেই রিংয়ে কয়েক বছরের প্রতি মাসের দিন, তারিখ বছর ছিল। আমার মাথায় আসে সেটাই যদি আদি অনন্ত কালের জন্য করা যায়। সেই ভাবনা থেকে শুরু।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, তার পর থেকে আত্রেয় তার নিজের বিষয় গণিত নিয়ে হিসাব কষা শুরু করে দেয়। হিসাবে ১৪ ধরণের সন তারিখের ক্যালেন্ডার উঠে আসে। যার মধ্যে সাতটি নিয়মিত ক্যালেন্ডার। বাকি সাতটি লিপ ইয়ারের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির ২৯ দিনকে ধরে করা। সেই ১৪ সালের ক্যালেন্ডারের গবেষণা আজ পৌঁছে দিয়েছে ‘অনন্ত ক্যালেন্ডারে’। যাতে ১০, ৫০, ১০০ এমনকি দু’হাজার বছরের তারিখও মিলে যাবে। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ওয়েবসাইটে গর্বের সঙ্গে ছাত্রের এই কৃতিত্বের পাশাপাশি তাঁর আবিস্কারকে ‘ভারতীয় স্বত্ব’ বা ‘ইন্ডিয়ান পেটেন্ট অ্যাডভান্স সার্চ সিস্টেমের’ স্বীকৃতির কথা উল্লেখ করেছে।
আত্রেয় জানান, ‘‘সারা দেশে দশ কোটি লোক যদি প্রতি বছর একটা করে ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে সেটা কমপক্ষে ১০ টাকা দামের হবে। তাতেই প্রচুর টাকা খরচ হয়। কিন্তু তার তৈরি অনন্ত ক্যালেন্ডার যদি একবার কেউ ব্যবহার করে কয়েক প্রজন্ম তাকে কিনতে হবে না।’’ তাঁর গণিত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে আত্রেয় তাঁর নিজের হাতে তৈরি অনন্ত ক্যালেন্ডার করতে ৫০ টাকা খরচ করেছেন। বাণিজ্যিকভাবে করতে ২৫ টাকা খরচ হবে। যেটা দেখতে ছোট। ব্যবহার সহজ। অল্প জায়গায় রাখা যায়। আত্রেয় জানান, তাঁদের বিভাগের হেড অফ দ্যা ডিপার্টমেন্ট কল্পনা শর্মা-সহ অনান্য শিক্ষকেরা তার এই কাজে চরম উৎসাহ দিয়েছেন। তার এই আবিস্কারে খুশি সিউড়ি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.