সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ফুল হিসেবে পরিচিত র্যাফ্লেশিয়া। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বৃষ্টিচ্ছায় অরণ্যে এর দেখা মেলে। প্রকৃতির অন্যতম সুন্দর সৃষ্টি ফুল হলেও, র্যাফ্লেশিয়া যত না আকর্ষণ করে, তার চেয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়ায়। কারণ, প্রথমত এটি পরজীবী। অর্থাৎ অন্যের উপর নির্ভর করে বাঁচে এবং ক্ষণজীবী। এত বড় ফুলের চেহারাও যেন সর্বগ্রাসী। কিন্তু সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ায় তুয়ান-মুয়াদে নামে এক প্রজাতির র্যাফ্লেশিয়ার আকার রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আরও চমকপ্রদ তথ্য, মৃত মানুষের পচেগলে যাওয়া একটি জায়গায় এমন একটি ফুল ফুটেছে! যদিও ৭ দিন পর ফুলটি ঝরেও পড়ে। তার আগেই রীতিমত ভাইরাল তুয়ান-মুয়াদে।
ইন্দোনেশিয়ার বৃষ্টিচ্ছায় অরণ্যে গত সপ্তাহে একটি বিশালাকার ফুল দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। উজ্জ্বল কমলা-লাল রং। দেখেই আকর্ষণ হয়। বৃষ্টিভেজা জমিতে যেতে যেতে তাই থমকে দাঁড়িয়েছিলেন কয়েকজন। কাছে গিয়ে দেখেন, যতটা ভেবেছিলেন, তার থেকেও বড় আকারের ফুল। যার মধ্যভাগটিই অন্তত ১১৭ সেন্টিমিটার চওড়া। মনে করা হচ্ছে, এত বড় র্যাফ্লেশিয়া আগে কখনও কোথাও দেখা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা অরণ্যের ওই জায়গা থেকে বিশ্রী গন্ধও পেয়েছিলেন। পরে বুঝতে পারেন যে সেটি মানুষের ত্বক পচে মাটিকে মিশে যাওয়ার গন্ধ। অর্থাৎ সেখানে কোনও মানুষের মৃতদেহ ফেলা হয়েছিল।
উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের কথায়, র্যাফ্লেশিয়া সাধারণত এমন দুর্গন্ধযুক্ত জায়গাতেই জন্মায়। আর তার রূপে মুগ্ধ হয়ে মৌমাছি বা অন্যান্য পতঙ্গ ছুটে আসে। তাদের পরাগমিলন ঘটায়। ইন্দোনেশিয়ার প্রকৃতি সংরক্ষক বোর্ডের সদস্য আদে পুত্রার কথায়, ”এই প্রজাতির র্যাফ্লেশিয়ার সাধারণত যা আয়তন থাকে, এটি তার চেয়েও বড়। ২০১৭ সালে আমকা একটি দেখতে পেয়েছিলাম, যার মধ্যভাগের ব্যাস ছিল ১০৭ সেন্টিমিটার। আর এটি ১১৭ সেন্টিমিটারের।” এই বৃহৎ ফুল ক্ষণজীবী হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই শুকিয়ে মরে যায়। ইন্দোনেশিয়ার এই তুয়ান-মুয়াদেও সাতদিনের মধ্যেই ঝরে গিয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে সে তার একটা ছাপ রেখে গেছে। আশেপাশের মানুষজন যতটুকু সময় পেয়েছেন, চোখ ভরে দেখেছেন ফুলের শোভা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.