Advertisement
Advertisement

Breaking News

Corona patient

‘মারা গিয়েছি!’, আতঙ্কে নিজেকেই মৃত ঘোষণা করে সৎকারের দাবি খোদ করোনা রোগীর

করোনা রোগীর এমন আচরণ প্রসঙ্গে কী বলছে চিকিৎসকরা?

A corona patient thought that he died in Kolkata ।Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:September 23, 2020 1:52 pm
  • Updated:September 23, 2020 2:53 pm  

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: “আমি তো করোনায় (Coronavirus) মারা গিয়েছি। তোমরা এখনও কেন আমার সৎকার করোনি। শিগগির আমার চোখে তুলসীপাতা দাও। জল দাও। শুইয়ে দাও। সৎকার করো।” সাতসকালে গোটা ঘরময় ছুটতে ছুটতে চিৎকার করে এমন কথা বারবার বলছিলেন দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়া যোধপুর পার্কের বছর বাষট্টির বৃদ্ধ। আচমকা তাঁর এমন ব্যবহারে হতভম্ব তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে। প্রথম ধাক্কা সামলে তাঁরা যতবার বলছেন যে নবীনবাবু দিব্য বেঁচে আছেন। তাঁর কোনও সমস্যা নেই। ততই চিৎকার বেড়ে যায়। ফের বলতে থাকেন, “তোমরা কেন বুঝতে পারছ না? আমি করোনায় মরে গিয়েছি। এটা মৃতদেহ। তোমরা আমার দেহ সৎকার করে উদ্ধার করো। না হলে তোমাদেরও করোনা হবে।”

টানা চারদিন না ঘুমিয়ে রাতদিন একই প্রলাপ বকায় তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে ওই বৃদ্ধকে (Old man) নিয়ে হাজির হন ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রিতে। ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা ডা. প্রদীপ সাহাকে হাতের কাছে পেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে তাঁকেও একই কথা বলতে থাকেন। বৃদ্ধের একই কথা তিনি করোনায় মারা গিয়েছেন। তাঁর দ্রুত সৎকার করতে হবে। ডা. প্রদীপ সাহা ধৈর্য ধরে সব শুনে ওষুধ দেন। এখন তিনি অনেকটাই ভালো। করোনা আতঙ্কে এমনই ঝড় বয়ে গিয়েছিল ওই পরিবারের উপরে।

Advertisement

গত আট মাসে ইনস্টিটিউট অফ সাইক্রিয়াট্রিতে করোনা সম্পর্কে মানসিক ভীতি বা বিপর্যয় নিয়ে আসা বেশ কিছু কেস স্টাডি করেছেন প্রদীপ সাহা ও তাঁর সহকর্মীরা। কিন্তু নিজেকে বারবার মৃত সাব্যস্ত করার ঘটনা আসেনি। অধিকর্তার কথায়, “এটাও এক ধরনের মানসিক সমস্যা। মনোবিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ফোবিড সাইকোসিস। অর্থাৎ কোনও একটি বিষয়ে বারবার ভাবলে একটা আতঙ্ক বা ফোবিয়া তৈরি হয়। সেটাই মানসিক সমস্যার আকার নেয়।” প্রদীপবাবুর কথায়, “করোনা ভাইরাস নিয়ে বারবার ভাবার ফলে ওই বৃদ্ধের মনে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। তারই বহিঃপ্রকাশ হয়েছে এইভাবে।”

[আরও পড়ুন: এ কী কাণ্ড! সাফাই অভিযানে নর্দমা থেকে উদ্ধার বিশালাকার ‘রাক্ষুসে ইঁদুর’]

করোনা আতঙ্কে কেউ আত্মহত্যা করতে চেয়েছেন। কেউবা বাড়ি থেকে চলে যেতে চেয়েছেন। এমনকী, কেউ ঘুমের মধ্যেই যাতে তাঁর মৃত্যু হয় এমনও বলেছেন। সাময়িক মানসিক বিপর্যয় থেকে সুস্থ করতে তাঁদের ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে। ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রিতে গত কয়েক মাস ধরে তাঁদের চিকিৎসা করে সুস্থ করা হয়েছে। কিন্তু নিজেকে মৃত সাব্যস্ত করে দ্রুত সৎকারের মতো সমস্যা আসেনি বলে ইনস্টিটিউট সূত্রে খবর। প্রদীপ সাহার কথায়, “করোনা আবহে পরিবারের কেউ এমন সমস্যা হলে দ্বিধাদ্বন্দ্ব না করে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ (Psychiatrist) চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তাতে রোগী ও পরিবারের ভোগান্তি কমবে।”

[আরও পড়ুন: ছোটবেলার স্বপ্ন, সারাজীবনের জমানো পুঁজি দিয়ে নিজেরই মূর্তি বানালেন এই কাগজকুড়ানি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement