সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীন ভারতের বয়স আর তাঁর ভারতে বসবাসের সময়কাল এক। কিন্তু এই ৭৫ বছরেও সীমান্তপাড়ের পৈতৃক বাড়ি, রাস্তাঘাট, প্রতিবেশীদের ভুলতে পারেননি। মৃত্যুর আগে পাকিস্তানের (Pakistan) রাওয়ালপিণ্ডির ছোটবেলার সেই ঠিকানা একবার ছুঁয়ে আসতে চান, জানিয়েছিলেন দুই দেশের কর্তা ব্যক্তিদের। একাধিক জটিলতা ডিঙিয়ে শেষ পর্যন্ত সেই ইচ্ছে পূর্ণ হয়েছে। সৌজন্য দেখিয়েছে পাকিস্তান। মঞ্জুর হয়েছে ভারতের তরফের আরজি। শনিবার ওয়াঘা সীমান্ত ডিঙিয়ে স্মৃতির মেয়েবেলায় পাড়ি দিলেন ৯১ বছরের বৃদ্ধা!
ভারত-পাকিস্তান একে অপরের ‘শত্রু’ দেশ। সীমান্ত সংঘর্ষ, সন্ত্রাসবাদ তথা জঙ্গি সমস্যা অব্যাহত। রবিবারও পাকিস্তানি ড্রোন দেখা গিয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের সীমান্ত এলাকার ভারতের আকাশে। ভারতীয় বাহিনী সেটিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে তা পাকিস্তানে ফিরে যায়। এই পরিস্থিতিতে ৯১ বছরের রিনা ছিবারের (Reena Chhibar) ইচ্ছেপূরণ হওয়া রূপকথার সমান!
দেশভাগের পর ১৯৪৭ সালে রাওয়ালপিন্ডির (Rawalpindi) বাড়ি ছেড়ে ভারতে চলে আসে রিনার পরিবার। রিনা তখন বছর পনেরোর কিশোরী। স্বভাবতই শিকড় ছিঁড়ে আসতে কষ্ট হয়েছিল। কিন্তু নির্মম দেশভাগের আঘাত অন্যদের মতোই সহ্য করতে বাধ্য হয়েছিল পরিবারটি। পৈতৃক ভিটেমাটি, বন্ধু, প্রতিবেশীদের ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন ওঁরা। কিন্তু শিকড়কে ভুলতে পারেননি বর্তমানে ৯১ বছরের রিনা। সম্প্রতি দুই দেশের কাছে আরজি জানান তিনি, একবার রাওয়ালপিন্ডি যেতে চান, পৈতৃক বাড়িতে ফিরতে চান। বেঁচে-বর্তে থাকা প্রতিবেশী, বন্ধুদের দেখতে দেখার ইচ্ছে বৃদ্ধার।
শত্রুতার সম্পর্ক সরিয়ে সৌজন্য দেখায় পাকিস্তান। তিন মাসের ভিসা মঞ্জুর করা হয় রিনা ছিবারের। এরপরই শনিবার ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে কৈশোরের রাওয়ালপিন্ডিতে পাড়ি দিলেন ৯১ বছরের বৃদ্ধা। যাওয়ার আগে জানিয়ে গেলেন, “আমার ও একান্নবর্তী পরিবারের অন্য ভাইবোনেদের বন্ধুরা ছিলেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। অনেকেই ছিলেন মুসলমান।” আরও বলেন, “ওই বাড়ি, রাস্তাঘাট, প্রতিবেশীরা আমৃত্যু আমার হৃদয়ে থেকে যাবে। মোছা যাবে না।” হৃদয়ের ধর্ম নেই, সীমান্ত হয় না বলেই হয়তো!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.