সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডাকাত বললেও কম বলা হবে৷ পুলিশকে রীতিমতো নাকানিচোবানি দিয়ে ঘোরাল অস্ট্রেলিয়ার ৪ খুদে ছিনতাইবাজ৷ বয়স তাদের ১০ থেকে ১৪ বছর৷ কিন্তু পুলিশের ধারণা, এই বয়সেই অপরাধে যেভাবে হাত পাকিয়েছে এরা, তাতে বড়দের অনায়াসে হারিয়ে দিতে পারে৷
অস্ট্রেলিয়ার রকহ্যাম্পটন থেকে গ্রাফটন৷ কমপক্ষে হাজার কিলোমিটার রাস্তা৷ ঠিকঠাক গতিতে গাড়ি চালালে ১১ ঘণ্টার কাছাকাছি সময় লাগে৷ ৪ খুদে সেই ১১ঘণ্টার জার্নিতেই পৌঁছে গেল এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা৷ তাদের অন্তহীন পথচলা হয়ত ফুরতো না, যদি না গ্রাফটনের কাছে এসে তারা পুলিশের নজরে পড়ে যেত৷ বছর দশের এক বালিকা, বছর তেরোর দুই কিশোর আর চোদ্দ বছরের এক নাবালক-এই চারজনের একটা দল, যাকে খুদে ডাকাতের দলই বলা চলে৷ এরা ঠিক করে, গাড়ি চড়ে ভ্রমণে বেরিয়ে পড়বে৷ কিন্তু এই বয়সে গাড়ি চালানো শেখা গেলেও, তা চাইলেই তো পাওয়া যায় না৷ তাই উপায় বলতে একমাত্র গাড়ি চুরি করা৷
সেই লক্ষ্যেই একেবারে কোমর বেঁধে তৈরি হতে থাকে তারা৷ একজন তো বাড়িতে একটা চিরকুটই রেখে যায়, যাতে গোটা গোটা অক্ষরে তাদের পরিকল্পনার কথা লেখা ছিল৷ শনিবার রাত থেকে অপারেশনে নামে তারা৷ ব্যাগে টাকাপয়সা এবং আত্মরক্ষার জন্য মাছ ধরার বঁড়শি সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে৷ কুইন্সল্যান্ডের বানানা এলাকা থেকে একটি গাড়ি কার্যত ছিনতাই করে ৪ জন৷ এরপর পেট্রল ভরে৷ এবং অচেনার উদ্দেশে পাড়ি দেয়৷ স্টিয়ারিংয়ে বসে চলে পেরিয়ে যায় প্রায় হাজার কিলোমিটার রাস্তা৷ দেশের প্রায় এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত৷
এদিকে, ছিনতাই হওয়া গাড়ির মালিক কুইন্সল্যান্ড পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে৷ সেইমতো তদন্তে নামে পুলিশ৷ গাড়িটি ট্র্যাক করতে থাকেন আধিকারিকরা৷টানা একদিন পর রবিবার রাতের দিকে গ্রাফটনে গাড়িটির হদিশ মেলে৷ এই এলাকা আবার নিউ সাউথ ওয়েলসে পুলিশের তত্বাবধানে৷ পুলিশ জানাচ্ছে, গাড়িটি আটকানোর পর তাঁরা দেখেন, ভিতরে ৪ জন কিশোর, কিশোরী৷ তারা কিছুতেই গাড়ি থেকে নামতে চাইছে না৷ ইন্সপেক্টর ড্যারেন উইলিয়ামসের কথায়, ‘ওরা ভিতর থেকে গাড়ির দরজা লক করে দিয়েছিল৷ কিছুতেই গাড়ি থেকে নামছিল না৷ আমাদের বাধ্য হয়ে গাড়ির দরজা ভেঙে ওদের বের করে গ্রেপ্তার করতে হয়৷ রকহ্যাম্পটন থেকে গ্রাফটন – এই দীর্ঘ প্রায় ১০০০ কিলোমিটার রাস্তা কে গাড়িটা চালিয়েছিল, তা বোঝা যাচ্ছে না৷ তবে মনে হয়, চারজনই ভাগ ভাগ করে স্টিয়ারিং ধরেছিল৷’ এই চার খুদের এমন দুঃসাহসী কাণ্ডকারখানা রীতিমতো ভাবিয়ে তুলছে তদন্তকারীদের৷ অনেক কিছুই বুঝতে পারছেন না তাঁরা৷ তাই গ্রেপ্তার করলেও, নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যত্নেই রাখা হচ্ছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.