সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সর্বংসহা ধরিত্রী। সর্বংসহা নারী। ব্যথা, যন্ত্রণা সবই অসীম শক্তিতে সয়ে নিতে পারেন নারীরা। ভুলেও যেতে পারেন অনেক দ্রুত। তুলনায় পুরুষের সহ্যশক্তি অনেক কম। বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা। কানাডার টরেন্টো মিসিসাগা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, পুরুষরা যে কোনও যন্ত্রণার কথা অনেক বিস্তারিতভাবে মনে রেখেছেন। তুলনায় মহিলাদের স্মৃতিতে যন্ত্রণা তেমন বাসা বাঁধতে পারে না।
একদল পুরুষ ও মহিলার ওপর সমীক্ষা চালিয়েছিলেন টরেন্টো মিসিসাগা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। কীভাবে হল পরীক্ষা? একটি ঘরে পুরুষ এবং মহিলাদের নিয়ে গিয়ে ত্বক কতটা উষ্ণতা সহ্য করতে পারে, তা একবার দেখা হয়। তারপর কতটা চাপ নিতে পারে মানবশরীর, তাও পর্যবেক্ষণের মধ্যে আনা হয়। সমীক্ষা শেষে জার্নালে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, দুই ক্ষেত্রেই ধৈর্যের পরীক্ষায় পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশি নম্বর পেয়েছেন। যে কোনও সহ্যশক্তিই তাঁদের বেশি। যন্ত্রণার তীব্রতা খুব মারাত্মক মাত্রায় না পৌঁছলে, তাঁরা তেমন গ্রাহ্য করেন না। আর পুরুষ, সামান্য ব্যথা পেলেই প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেন। শারীরিকভাবে তো বটেই, মানসিকভাবেও কিছুটা ভেঙে পড়েন। এমনকি এই অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিন মনে রাখার ফলে, পরবর্তী সময়ে একই পরিস্থিতিতে পড়লে তা এড়িয়ে যেতে চান।
[অকালে পক্ক কেশ? সমস্যা সমাধানের কয়েকটি উপায়]
টরেন্টো মিসিসাগা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষকদলের প্রধান অধ্যাপক লোরেন মার্টিনের কথায়, ‘আমাদের সাধারণত ধারণা থাকে, মহিলারা পুরুষদের তুলনায় কিছু ক্ষেত্রে দুর্বল। তাই ব্যথাবেদনায় তাঁরাই বেশি কাতর হয়ে পড়েন। সেই ধারণা কতটা ঠিক, তা বুঝতেই আমাদের এই গবেষণা। আমরা এটা বোঝার চেষ্টা করেছিলাম যে মানুষ যন্ত্রণার কথা কীভাবে মনে রাখেন। আদৌ এর কোনও প্রভাব পরবর্তী সময়ে পড়ে কি না। তাতেই এই পর্যবেক্ষণ। তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা মহিলাদের চেয়ে পুরুষ বেশি করে মনে রাখেন।’ তবে এও দেখা গিয়েছে, অন্যান্য যন্ত্রণা দ্রুত সয়ে নিতে পারলেও, দহনজ্বালায় তাঁরা খুবই কাতর হয়ে পড়েন। এর কারণও বের করে ফেলেছেন গবেষকরা। কারণটা নিতান্তই জৈব রাসায়নিক। পুরুষ শরীর থেকে ব্যথা নিরাময়ের হরমোন বেটা এন্ডোরফিনের ক্ষরণ অনিয়মিত। তাই একটু বেশি যন্ত্রণার মোকাবিলায় ততটা শক্তিশালী নয় পুরুষ। এনিয়ে আরও একটি মিথও আছে বটে। প্রসব যন্ত্রণা সহ্য করার মতো দুরূহ কাজ মহিলারা অনায়াসে সামলে নেন। তাঁদের কাছে কি আর কোন যন্ত্রণাই বা এর চেয়ে বেশি? তবে এটা মিথ মাত্র। এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.