Advertisement
Advertisement

Breaking News

Purulia Travel news

পর্যটনের জেলায় ‘টুরিস্ট সিটি’ গড়ার লক্ষ্য, ঢেলে সাজানো হচ্ছে পুরুলিয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থা

কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে? বেড়াতে যাওয়ার জেনে রাখুন।

West Bengal govt to make tourist city in Purulia | Sangbad Pratidin

ছবি: সুনীতা সিং

Published by: Suparna Majumder
  • Posted:December 17, 2022 3:07 pm
  • Updated:December 17, 2022 3:07 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: অবশেষে পুরুলিয়া (Purulia) জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে পুরুলিয়া পুরসভা ও জেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ঢেলে সাজছে এই শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা। সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে এই শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায় গতি আনতে চাইছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। এই লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া পুরসভার স্বয়ংসিদ্ধা হলে পুরুলিয়া পুরসভা পুরুলিয়া জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনকে নিয়ে একটি বৈঠক করে।

পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সেই ২০১০ সাল থেকে শহর পুরুলিয়ার যানজটকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সময় এই জেলার ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) ছিলেন বর্তমান পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় তার তত্ত্বাবধানে এই শহরে খানিকটা যানজট নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে পুলিশ। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর তৎকালীন জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিং এই কাজে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু পুরসভার তরফ থেকে সেভাবে কোন সাহায্য না মেলায় তা আর সম্ভব হয়নি।

Advertisement
Purulia-Traffic-1
ছবি: সুনীতা সিং

পরবর্তীকালে ২০১৬ সালে এই জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার এই চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পুরসভার তরফে সেভাবে সহযোগিতা না মেলায় ওই উদ্যোগ ব্যর্থ হয় । আবার পুনরায় রীতিমতো পরিকল্পনা ছকে সেই চেষ্টাই করছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ (Purulia Police)। এবার সবরকম ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পুরুলিয়া পুরসভা ও পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একটা শহর কতখানি স্মার্ট তা বোঝা যায় শহরের পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ঘিরেও। পর্যটনের এই জেলায় পুরুলিয়াকে ‘টুরিস্ট সিটি ‘ হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য সরকার । ফলে ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতেই হবে। সেই কারণে আমরা কয়েকটি পদক্ষেপ নিচ্ছি।”

কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? পুরুলিয়া জেলা পুলিশ ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই শহরে দু’জন ট্রাফিক ওসি মোতায়েন করা হচ্ছে । বর্তমানে একজন ওসি রয়েছেন। দুই ওসিকে মোতায়ন করে এই শহরের দু’দিক ভাগ করে আলাদা আলাদা ভাবে দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া হবে। যাতে সহজেই যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়া এই শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায় বেশি সংখ্যক পুলিশ কর্মী মোতায়েন করে সুইপিং টিম থাকবে । পুলিশ আধিকারিকদের তত্ত্বাবধানে এই কাজ হবে। রাঁচি রোড, দুলমি রোড তৎসংলগ্ন এলাকা একজন ওসিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে । আরেক ওসিকে দেশবন্ধু রোড, গোশালা সন্নিহিত এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হবে।

[আরও পড়ুন: নয়া চমক রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের, এবার কলকাতার কাছেই রোপওয়ে ভ্রমণের সুযোগ]

দ্বিতীয়ত, টোটো চলাচলকে একটি ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আনতে চাইছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ ও পুরুলিয়া পুরসভা। বর্তমানে খাতায়-কলমে ১৭০০ টোটো তালিকাভুক্ত থাকলেও এই শহরে টোটো চলাচল করছে প্রায় দু’হাজারের বেশি। ফলে নরক যন্ত্রণায় ভুগছে এই শহর। এক কথায় যানজটের শহর হয়ে উঠেছে। এই ব্যবস্থারই বদল ঘটাতে চাইছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ।

পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন,”শহরের টোটো মালিকরা শহরে এই যান চালাবেন। গ্রামাঞ্চলের মালিকরা গ্রাম থেকে শহরের মুখে যাত্রী সহ টোটো নিয়ে আসবেন।” এছাড়া পুলিশ ও পুরসভা বৈধ টোটো গুলিকে রঙ করে যাত্রীদের জানিয়ে দেবে। তৃতীয়ত, রাস্তা দখল করে দোকানে পসরা সাজিয়ে রাখা যাবে না। ইতিমধ্যে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ এই বিষয়ে পদক্ষেপ করে পথ চলাচলে নাগরিকদের সুবিধা করে দিয়েছে। ফলে মানুষ ভীষণই খুশি।

এই ব্যবস্থাপনায় পুরুলিয়া জেলা পুলিশ ও পুরসভা রাস ময়দানে লোডিং, আনলোডিং-এর ব্যবস্থা করেছে। রাত ১০ টা থেকে সকাল ছ’টা পর্যন্ত ওই ময়দানে লোডিং, আনলোডিং চলবে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে পণ্য ওঠানামা করা চলবে না। চতুর্থত, শহরের একাধিক জায়গায় পার্কিং প্লেস করছে পুরুলিয়া পুরসভা। যেমনভাবে জুবিলি ময়দানে পার্কিং প্লেস চালু করা হয়েছে। তেমনই সাহেব বাঁধ এলাকা, সুভাষ উদ্যান, রাঁচি রোডে পূর্ত দপ্তর সন্নিহিত এলাকায় চার চাকার পার্কিং প্লেস করা হবে। দু’চাকার পার্কিং প্লেস হবে চাইবাসা রোড, দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা ও জেলা গ্রন্থাগার এলাকায়।

Purulia-Traffic-2
ছবি: সুনীতা সিং

স্টেশনের পাশে ডাক বাংলোতে চারচাকা ও দু’ চাকা এবং টোটোর জন্য পার্কিং প্লেস ও স্ট্যান্ড করতে পুরুলিয়া পুরসভা জেলা প্রশাসনকে চিঠিও দিয়েছে। শহরের রেডক্রস রোডে অ্যাম্বুলেন্সের পার্কিং প্লেসের ব্যবস্থা নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। পঞ্চমত, পুরুলিয়া বাস স্ট্যান্ড থেকে বাস বার হওয়ার পরে কোন স্টপেজ দেওয়া যাবে না। ঝাড়খণ্ডের বাস একটি নির্দিষ্ট স্থানে বাসস্ট্যান্ডে থাকবে । অটো, ম্যাক্সি রাঁচি রোডে পূর্ত দপ্তর কার্যালয় এলাকায় নিয়ে যাওয়ার ভাবনা চিন্তা চলছে। ষষ্ঠত, বিয়েবাড়ি বা কোন সামাজিক অনুষ্ঠান যে হোটেলে হবে সেই প্রতিষ্ঠানকে ওই এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে।

সাত, ট্রাফিক সচেতনতায় এই শহরের বিভিন্ন স্তরের মানুষজনকে পথে নামিয়ে সচেতনতার প্রচার চলবে। এই কাজে শামিল থাকবেন স্কুল থেকে কলেজ পড়ুয়ারা। শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ড ও সাহেব বাঁধ এলাকায় প্রি-পেইড ট্যাক্সির কাউন্টার খুলে এই ব্যবস্থাও চালু করার কথা ভাবছে পুর কর্তৃপক্ষ।

শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায় সাত পদক্ষেপ: 
১) দুই ট্রাফিক ওসি মোতায়েন। সঙ্গে নিয়মিত পুলিশ আধিকারিকদের নজরদারি।
২) একটি রঙে বৈধ টোটোকে স্বীকৃতি। সেই সঙ্গে টোটো স্ট্যান্ড ।
৩) রাস্তা দখল করে দোকানের পসরা নিয়ে সাজানোতে নিষেধাজ্ঞা। পণ্য ওঠানোর জন্য নির্দিষ্ট স্থান। শহরে ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধ।
৪) শহরের একাধিক জায়গায় দু’চাকা ও চার চাকার পার্কিং প্লেস।
৫) শহর দিয়ে বাস চলাচলে বিধি নিষেধ।
৬) হোটেল, লজে বিয়ে বাড়ি সামাজিক অনুষ্ঠান হলে তাদেরকে ট্রাফিক ব্যবস্থা মোতায়নে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে।
৭) শহরে সর্বস্তরের নাগরিকদেরকে নিয়ে ট্রাফিক সচেতনতার পাঠ।

[আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমে সুখবর! এবার এক টিকিটেই ঘোরা যাবে কলকাতার ২১ দর্শনীয় স্থান]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement