ফাইল ছবি।
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বাঘ আতঙ্কের মধ্যেই ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে থাকা পুরুলিয়ায় ঢুকে পড়েছে ৪০ টি হাতি। গত শুক্রবার ভোররাতে এই জেলা ও লাগোয়া ঝাড়খণ্ড সীমান্তে হাতিগুলির অবস্থান জানা যায়। ভরা পর্যটনের মরশুমে এই বিপুল সংখ্যক হাতিকে সামলাতে গিয়ে চাপ বেড়েছে পুরুলিয়া বনবিভাগের। শনিবার সকাল পর্যন্ত এই জেলা ও লাগোয়া ঝাড়খণ্ড সীমানায় রয়েছে ৪৩ টি হাতি। ফলে পরিস্থিতি এমনই যে পুরুলিয়া বনবিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ, এডিএফও সায়নী নন্দীকে নিয়ে শুক্রবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত উপদ্রুত বনাঞ্চল গুলিতে গিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আপাতত জঙ্গলে ট্রেকিং বন্ধ।
বনবিভাগ সূত্রে খবর, ওই হাতির দল শনিবার সকাল পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতি করেনি। যে সব জঙ্গলে ওই হাতিগুলি রয়েছে, ওই এলাকা ঘিরে রেখেছেন বনকর্মীরা। ওই হাতির দল যাতে কোনওভাবেই লোকালয়ে আসতে না পারে। চাষের জমিতে আমন ধান না থাকলেও সেই ধান এখন রয়েছে এই জেলার গ্রামীণ এলাকায় খামার বাড়িতে। ওই বিপুল সংখ্যক হাতির দল লোকালয়ে চলে আসলে ওই ধান তছনছ করে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে ২৪ ঘন্টা নজরদারি চলছে পুরুলিয়া বনবিভাগের। অযোধ্যা পাহাড়ে পর্যটকদের ভিড় থাকলেও বুনো হাতির কথা ভেবে জঙ্গল ট্রেক বন্ধ করে দিয়েছে বনদপ্তর।
পুরুলিয়া বনবিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “যে এলাকায় হাতি আছে, আমি সেই রেঞ্জগুলিতে গিয়ে বৈঠক করে বনকর্মী ও আধিকারিকদের বলেছি, হাতির দল যাতে কোনওভাবেই লোকালয়ে না আসে। সে বিষয়ে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। ইতিমধ্যেই মাইকিং চলছে ওই রেঞ্জগুলিতে। পর্যটকরা যাতে জঙ্গলে না যেতে পারেন তার জন্য টহল শুরু হচ্ছে।” আরও জানা গিয়েছে, বাঘমুন্ডি বনাঞ্চলের আটনা ও লাগোয়া ঝাড়খণ্ড সীমানায় ২ টি, কোটশিলার সিমনি, ঝালদা রেঞ্জের দিগরডি লাগোয়া ঝাড়খণ্ড সীমানায় একটি হাতি, ঝালদা রেঞ্জের হেপাড ও লাগোয়া ঝাড়খণ্ডে ৪০ টি হাতি রয়েছে। এসএমএসের মাধ্যমে জনতাকে সতর্ক করে পুরুলিয়া বনবিভাগ বলছে, ”জঙ্গলে যাবেন না। সকলে সতর্ক থাকবেন।”
যে এলাকায় হাতিগুলি রয়েছে, তার পাশেই অযোধ্যা পাহাড়। ওই পাহাড়ে এখন ঠাসা পর্যটক। পুরুলিয়া ছুঁয়ে থাকা ঝাড়খণ্ডে বাঘের অবস্থানের পাশাপাশি হাতি থেকে সতর্কতার জন্য শনিবার থেকে ২৪ ঘন্টা শিফটিং ডিউটি শুরু হচ্ছে। অযোধ্যা পাহাড় ও পাহাড়তলিতে যেসব সরকারি আবাস, কটেজ, রিসর্ট, লজ, হোটেলে পর্যটকরা রয়েছেন সেই আবাস কর্তৃপক্ষদের বনদপ্তর থেকে বলে দেওয়া হয়েছে, বিধি মেনে অযোধ্যা পাহাড়ে চলাচল করতে হবে। ঘন জঙ্গল এলাকায় যাওয়া একেবারেই নিষিদ্ধ হয়েছে। বিভিন্ন কটেজ, রিসর্ট কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব গাইড দিয়ে পর্যটকদের বিভিন্ন পাহাড় জঙ্গল ঘুরিয়ে আনে। ট্রেকিং করতে সহায়তা করেন। তবে আপাতত সেসব বন্ধ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.