সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: মঙ্গলবারই আভাস মিলেছিল, এবার পাকাপাকিভাবে বন্ধ হয়ে গেল দার্জিলিং পাহাড়ে পর্যটক এর প্রবেশ। আপাতত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত শৈল শহরে কোনওরকম প্রবেশকে অনুপ্রবেশ হিসেবেই ধরা হবে। এমনটাই জানিয়ে দিলেন জিটিএ বোর্ডের চেয়ারম্যান অনিত থাপা।
বুধবার দার্জিলিংয়ে প্রশাসনিক বৈঠকের পর এমনটাই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জিটিএ বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, “গোটা বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে সাবধানতা অবলম্বন দরকার। সিকিম আগেই বন্ধ করেছে। আমরাও অবস্থা বুঝে আপাতত পর্যটকদের পাহাড় ছাড়তে অনুরোধ করছি। সেই সঙ্গে সম্ভাব্য সবরকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা হচ্ছে। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জিটিএ সচিব সুরেন্দ্র যাদব, দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি, জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে। সেই সঙ্গে পর্যটন হোটেল রেস্তরাঁ পরিবহন-সহ সমস্ত যুক্ত প্রতিনিধিদের এদিন বৈঠক ডাকা হয়েছিল।
পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে মোট ১৩ দফা নিদান দেওয়া হয়েছে। কন্যাকে আপাতত দূরে ঠেকিয়ে রাখতে বলে জিটিএ-র তরফে নেওয়া হলফনামায় বলা হয়েছে। এর মধ্যে হোটেল, হোম স্টের সমস্ত বুকিং বাতিল করতে এবং নতুন কোনও বুকিং না নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এর জন্য পর্যটকদের কাছ থেকে কোনওরকম বাতিল শুল্ক ধার্য করা হবে না। বাইরের কোনও পর্যটক বাদে কোনও নাগরিককে জিটিএ এলাকায় কোনও গাড়িতে আনার উপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ জন্য পর্যটকদের সমস্ত রকম সহযোগিতা করার ব্যাপারে স্টেকহোল্ডারদের বলা হয়েছে। পাশাপাশি সিকিমের মতোই এলাকার বাসিন্দারা যেন আগামী কিছুদিন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এলাকার বাইরে না যান, সে বিষয়েও নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
জনসমাবেশ যত বেশি সম্ভব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নিতান্ত জরুরি হলেও নিরাপদ দূরত্ব থেকে কাজ চালাতে বলা হয়। রেস্তরাঁগুলি খোলা হলেও তাদের স্যানিটাইজ করা থেকে শুরু করে পরিছন্নতা বজায় রাখার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। কোথাও গাফিলতি পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন জিটিএ চেয়ারম্যান। বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইন এডুকেশনের উপর জোর দিতে বলা হয়েছে। এবং যথাসম্ভব বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি জিটিএ-র তরফ থেকে বিশেষ সচেতনতা অভিযান চালানো হবে। গোটা এলাকা জুড়েই বিশেষ করে সিঙ্কোনা বাগানে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। জিটিএ এলাকার বাইরে যাঁরা থাকেন, সেই সমস্ত ব্যবসায়ীদের হকার্স মার্কেটে হাট করতে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। সেই সঙ্গে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে আগামী কয়েকদিন কোনওরকম কর্মসূচি না নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সামাজিক জমায়েতের জন্য হল ভাড়া দেওয়ার উপরও জারি নিষেধাজ্ঞা।
[আরও পড়ুন: করোনার জেরে বাতিল দুরপাল্লার ট্রেন! ভিড় এড়াতে অতিরিক্ত লোকাল চালানোর ভাবনা]
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফে তন্ময় গোস্বামী। তিনি বলেন, “এছাড়া কোনও উপায় ছিল না। সব জায়গাতেই সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “সময়োচিত পদক্ষেপ। জীবন আগে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.