সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: করোনার কামড়ে বহুদিন কেটেছে ঘরবন্দি অবস্থায়। এবার ফের হাতছানি দিচ্ছে দূরদূরান্তের প্রকৃতি। সেই সুযোগ সমাগতও। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই খুলে যাচ্ছে বাঙালির প্রিয় পর্যটন স্থল, ঘরের কাছের দার্জিলিং (Darjeeling)। পাহাড়ের সমস্ত ভ্রমণ কেন্দ্রের তালা খুলছে পর্যটকদের জন্য। এখনই প্ল্যান করে রাখলে সেপ্টেম্বরে দার্জিলিং ভ্রমণে আর কোনও বাধাই নেই। রবিবার সন্ধেয় জিটিএ’র বৈঠক পর্যটকদের আনাগোনায় সম্মতি দেওয়া হয়েছে। তবে ঠিক কবে থেকে সব খুলবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত দিনক্ষণ স্থির হবে ৭ সেপ্টেম্বর।
খুব বেশি হলে সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখ। তার মধ্যে ফের হাতছানি দেবে দার্জিলিং পাহাড়। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে সেভাবেই প্রস্তুত হচ্ছে হোটেল, রিসর্ট, মার্কেট থেকে ট্র্যাভেল এজেন্সি পর্যন্ত সকলে। দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং, মিরিক – যেখানেই মন চাইবে, ছুটে চলে যেতেই পারেন। আপনার জন্য অবারিত দ্বার পাহাড়ের প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে। রবিবার এ নিয়ে পাহাড়ের হোটেল অ্যাসোসিয়েশন, ট্র্যাভেল এজেন্সি-সহ পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্তদের নিয়ে বৈঠকের বসেছিলেন জিটিএ (GTA) চেয়ারম্যান অনীত থাপা। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে স্থির হয়েছে, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের করোনা পরিস্থিতি দেখে দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই খুলে দেওয়া হোক পর্যটন। সূত্রের খবর, এই সিদ্ধান্তে সহমত সকলেই। তবে চূড়ান্ত দিনক্ষণ স্থির হবে ৭ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে।
আসলে দার্জিলিংয়ের অর্থনৈতিক ভিত্তি মূলত পর্যটন শিল্প। কাঞ্চনজঙ্ঘার শোভা আর সারি সারি চা বাগানের টানে সারা বছরই ভিড় লেগে থাকে রাজ্যের শৈলশহরটিতে। করোনা আবহে লকডাউনের জেরে প্রায় ৫ মাস পুরোপুরি বন্ধ ছিল পাহাড়ের পর্যটন। ফলে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সেখানকার ছোট, বড় ব্যবসায়ীরা। তবে জুন মাস থেকে ধাপে ধাপে আনলক পর্ব শুরু হয়েছে। তাতেও অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে পর্যটন শিল্পের তালা খুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ, সংক্রমণের আশঙ্কা ছিলই। দার্জিলিং, শিলিগুড়িতে প্রথমদিকে সংক্রমণ কম থাকলেও, মাঝে তার বাড়বাড়ন্ত বেশ চিন্তায় ফেলেছিল। তাই শিলিগুড়ির নামী মার্কেটগুলো খুলে বিকিকিনি শুরু হলেও, করোনার কোপে সেসব বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের জারি করা লকডাউনের জেরে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তাই পর্যটনের তালা খোলার চিন্তাভাবনা। জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা বলেন, ”বাইরে থেকে পর্যটকরা এসে যদি করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে এখানে ফের সংক্রমণ বাড়বে। সেই চিন্তা একটা থাকছেই। তাই আমরা কিছুদিন সময় নিয়েছি। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পরিস্থিতি একটু বুঝে নিতে চাইছি। তবে প্রস্তুতি চলছে ওই সময়ে থেকেই সব খুলে দেওয়ার।” ভ্রমণপ্রেমী বাঙালিও বোধহয় ব্যাগ গুছোচ্ছেন, এতদিন পর পাহাড়ে পাড়ি দিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.