অক্টোবর-নভেম্বরে মনোরম আবহাওয়া। পরিষ্কার আকাশ। সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা। পুজোর ছুটিতে উঠে পড়ুন উত্তরবঙ্গের ট্রেনে। লিখছেন পার্থময় চট্টোপাধ্যায়।
ছাওয়াফেলি
এখানে খুব ভোরে আর বিকেলের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে ময়ূর, ময়ূরী আসে। চা গাছের ঝোপে এদের বাসা। এখানেই এদের ঘর সংসার। ময়ূর পরিবারকে ‘বেভি’ বলা হয়। ময়ূর পেখম মেলে ময়ূরীকে আকৃষ্ট করে। স্ত্রী ময়ূরও পেখম মেলে শত্রুকে ভয় দেখানোর জন্য। ময়ূরের পেখম আকারে ময়ূরীর থেকে অনেক বড়। এই ছাওয়াফেলি মানে হচ্ছে ছাওয়া ফেলার জায়গা। এখানে একা আসতে হয়, সঙ্গে শুধু ক্যামেরা ও জলের বোতল। ঘণ্টা দুই থাকলেই অনেক কিছু পাওয়া যাবে। তবে হ্যাঁ, এখানে দিনের বেলাতেও হাতির দর্শন পাওয়া যায়। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়।
রাজকুমারী কুমাই
কুমাই কালিম্পং জেলার একটা পাহাড়ি গ্রাম। যেমন এর রূপ তেমন এর মনে রাখার মতো মানুষজন। নিউ মাল স্টেশন থেকে ৩৫ কিমি হবে, গাড়ি ভাড়া ১৫০০ টাকা। দুটো হোমস্টে আছে। দেখার মধ্যে পিকক পয়েন্ট, স্তূপ, কুমাই টি গার্ডেন, সান রাইজ আর সানসেট পয়েন্ট। দিনটা যদি শনিবার হয়, তবে একটা অতিরিক্ত পাওনা হবে কুমাইয়ের শনিবারের হাট। গোটা গ্রামের সাপ্তাহিক মিলনক্ষেত্র হচ্ছে এই শনিবারের হাট। কুমাই পাহাড় ৩০০০ থেকে ৩৫০০ ফুট উচ্চতায় হবেl ২০০০ ফুট পেরোনোর পরে কুমাইয়ের রূপের বৈশিষ্ট্য, রেড গ্রাস বা লাল ঘাস যা একমাত্র এখানেই দেখা যায়, তবে একটা বিশেষ সময়ে। এখlন থেকে সূর্যাস্ত দেখার এক চরম আবেগ, অনুভূতি, রোমান্স মনের গভীরে স্থান পায়, যা আজীবন ফ্রেমে বন্দি থাকে। কুমাইয়ের রাত মানে রাতজাগা পাখির গান, দূরের ভুটান পাহাড় নদীর হাতছানি। কুমাই থেকে ঘুরে দেখা যায় অনেকগুলি স্পট। যেমন- রকি আইল্যান্ড, সামসিং, চাপড়ামারি, গরুমারা জঙ্গল, নকশাল মৌরি, লাটাগুড়ি জঙ্গল, মূর্তি নদী, ডামডিম, দলগাঁও, বিন্দু, প্যারেন, জলঢাকা এই সব দর্শনীয় স্থানগুলো ৫ থেকে ৩০ কিমি এর মধ্যে। এছাড়া হাঁটা পথে, কুমাই টি গার্ডেন্স, বুদ্ধ স্তূপ এসব দেখা যায়। রাতের দূরের ভুটান পাহাড়ের আলোগুলো এক জাগতিক আনন্দে পূর্ণ করে।
জলসার আকর্ষণ
ঠিক বিকেল বিকেল জলসা বাংলোয় আসতে হয়। এখানকার সূর্য ডোবা এক জাগতিক অনুভূতি দেবে। জলসা বাংলো থেকে দেখা সূর্যাস্ত বহুদিন মনে আঁকড়ে থাকবে। এক স্বর্গীয় রূপ পাগল করে দেবে। দিনের শেষে এই ঘুমের দেশে সূর্যের চলে যাওয়ার মুহূর্তটাকে জীবনের আরেক চরম তৃপ্তি এনে দেয়। পেডং থেকে যেমন এই চারটে স্থান ঘুরে দেখা যায় সারাদিনের জন্য ৩০০০ টাকা চুক্তিতে তেমনি ৩৫০০ টাকায় ঘুরে নেওয়া যায় রেশপ, লাভা ও লোলেগাঁও। এছাড়া রেশমপথ বা সিল্ক রুট এখান থেকে ঘুরে আসা যায় ৪৫০০ টাকায়। এই সবগুলোই সকালে বেরিয়ে সন্ধ্যায় পেডং ফেরা যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.