সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘পর্যটন শহর’ পুরুলিয়ায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের এবার থেকে ঠাঁই দেবে ‘পলাশবিথি’। তাই দোল-হোলি, এসব উৎসবের মধ্যেই পুরুলিয়া পুরসভা পরিচালিত এই পর্যটক আবাস ‘পলাশবিথি’র দরজা খুলল। সম্প্রতি, পুরুলিয়ার পুরপ্রধান শামিম দাদ খানের হাত ধরেই এই পর্যটক আবাস আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়।
সম্প্রতি এই আবাস খুললেও দোল ও হোলিতে ঠিকই বুকিং পেয়ে গিয়েছে। এই জেলার পর্যটনের প্রসারেই পুরুলিয়া পুরসভা এই শহরের সাহেব বাঁধ ঘেঁষে এই পর্যটক আবাস তৈরি করে। এই পুরসভার নিজস্ব তহবিলের প্রায় বাইশ লক্ষ টাকা অর্থে এই পলাশবিথি গড়ে ওঠে। পুরসভার ক্যাম্পাসের একপাশে এই আবাসে একটি রেস্তোঁরা খোলারও পরিকল্পনা রয়েছে পুরুলিয়া পুরসভার।
পুরপ্রধান শামিম দাদ খান বলেন, “রাজ্য সরকার চাইছে, শহর পুরুলিয়াকে ‘ট্যুরিস্ট লুক’ দিতে। এই জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পর্যটনকেন্দ্রগুলির মুখ হোক এই শহর। তাই শহর সাজাতে আমরা সেই ভাবেই কাজ শুরু করেছি। সেই কাজের পদক্ষেপ-সহ পর্যটনের প্রসারে এই আবাস তৈরি করা হল।” আপাতত ৪টি ঘর দিয়ে এই আবাস চালু হলেও পরবর্তীকালে আরও বেশি করে এই পলাশবিথিতে পর্যটকদের জায়গা দিতে ইতিমধ্যেই ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে পুরসভা। যে রেস্তোঁরা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। স্বনির্ভর দলকে দিয়ে চালানো যায় কিনা সেই চিন্তাভাবনাও চলছে। তবে পর্যটনের প্রসারে পর্যটক আবাস হলেও পুরসভার পর্যটন বিভাগের কাজ কিন্তু সেভাবে হচ্ছে না বলে অভিযোগ। তবে এই বিষয়টি যাতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে করা যায় সেই চেষ্টা করছে পুরসভা।
রাজ্যের একাধিক পুরসভার অতিথি আবাস বা পর্যটক আবাস থাকলেও এই পুরসভার ছিল না। অথচ পুরুলিয়া সামগ্রিকভাবে একটি পর্যটনকেন্দ্র। সেই কথা মাথায় রেখেই বছর দুয়েক ধরে নিজস্ব তহবিল থেকে এই পর্যটক আবাস গড়ল পুরসভা। তিনতলার এই পর্যটক আবাসে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তল মিলে মোট চারটি ঘর রয়েছে। এই আবাস থেকেই সাহেববাঁধের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছেন পর্যটকরা।
পুরসভা জানিয়েছে, খরচ কমাতে পুরসভা তাদের নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ারের দেওয়া পরিকল্পনাতেই এই আবাস তৈরির কাজ করেছে। পুজোর আগেই এই আবাস চালু করার কথা ছিল। কিন্তু তা করে উঠতে পারেনি। এবার পুরভোটের কথা মাথায় রেখে এই আবাস তড়িঘড়ি চালু করল। পুরসভা আরও জানিয়েছে যে, শীতের মরসুমে জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে এতটাই ভিড় থাকে যে পর্যটকরা সেখানে থাকার জায়গা পান না। ফলে শহর পুরুলিয়ার হোটেল ও লজগুলিতেই আশ্রয় নেন পর্যটকরা। মাঝে মধ্যে সেখানেও ঘর পাওয়া যায় না।
পলাশবিথি এবার কিছুটা হলেও পর্যটকদের আশ্রয়ের চাহিদা মেটাবে। ফলে আয়ও বাড়বে পুরসভার। তাছাড়া এই পুরসভায় নানা প্রকল্পের কাজে প্রায় প্রতিদিনই রাজ্য স্তর থেকে আধিকারিকরা আসেন। ফলে তাদের রাত্রিবাসের ব্যবস্হা করতে হয়। এবার ওই কাজে খরচ অনেকটাই বাঁচবে পুরসভার। এখন এই আবাস বুকিং করার জন্য কোন ওয়েবসাইট চালু না হলেও পরবর্তীকালে তা করবে। তাই এখন পুরসভা থেকেই এই পলাশবিথির বুকিং নেওয়া হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.